রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতাকে একটি গাড়ি উপহার দিয়েছেন। পিয়ংইয়ং সফরে গিয়ে পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকে যেসব উপহার দেন, তার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তৈরি অরাস লিমুজিন। উপহারের তালিকায় আরও ছিল একটি টি সেট এবং অ্যাডমিরাল ড্যাগার।
পাল্টা উপহার হিসেবে ভ্লাদিমির পুতিন পেয়েছেন অনেকগুলো চিত্রকলা, যেখানে মূলত তাঁকেই আঁকা হয়েছে। পাশাপাশি নিজের আবক্ষ মূর্তিও পেয়েছেন তিনি কিম জং-উনের কাছ থেকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার পুতিনকে উত্তর কোরিয়ার রাজধানীতে শত শত উৎফুল্ল মানুষ স্বাগত জানান। তাঁর জন্য আড়ম্বরপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে কিম জং-উন ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানান। এ ছাড়া মস্কোর সঙ্গে আরও শক্তিশালী কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন তিনি।
অরাস সিনাট
সোভিয়েত আমলে দেশটিতে চলত জিল লিমুজিন। অরাস সিরাটকে অনেকটা একই রকমভাবে তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ অরাস সিনাট দেখতে অনেকটা জিলের মতোই। এটিই এখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক গাড়ি, অর্থাৎ প্রেসিডেনশিয়াল কার। গত মে মাসে ক্রেমলিনে তাঁর শপথ অনুষ্ঠানের দিনে ভ্লাদিমির পুতিন ওই গাড়িতে চড়েছিলেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে কিম জং-উন রাশিয়ার পূর্বাঞ্চল সফরে গিয়েছিলেন। তখন পুতিন তাঁকে একটি কালো রঙের অরাস গাড়ি দেখিয়েছিলেন। সেই গাড়ি ছিল ধাতব পাত লাগানো, যা গুলি ঠেকাতে পারে। কিম ওই গাড়িতে পুতিনের পাশে বসেন এবং মনে করা হয় যে তিনি গাড়ি চড়া বেশ উপভোগ করেছিলেন।
কার ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন অনুসারে, অরাস গাড়ির উৎপাদন শুরু হয় ২০১৮ সাল থেকে। ভ্লাদিমির পুতিনের ইচ্ছা ছিল রাশিয়াতেই একটি বিলাসবহুল গাড়ি তৈরির। সেই ইচ্ছারই ফসল হলো অরাস। পুতিন ২০১৮ সাল থেকেই একটি অরাস সিনাট গাড়ি ব্যবহার করছেন। আর সাধারণ মানুষের কাছে অরাস বিক্রি শুরু হয় ২০২১ সাল থেকে।
গত মাসে একজন রুশ কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, রাশিয়া চলতি বছর থেকে টয়োটার সাবেক একটি কারখানায় বিলাসবহুল অরাস গাড়ি তৈরি শুরু করবে। টয়োটার ওই কারখানা সেন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থিত।
রুশ বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান অটোস্ট্যাট জানিয়েছে, চলতি বছর রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৪০টি অরাস ব্র্যান্ডের গাড়ি বিক্রি হয়েছে।
কিমের গাড়িবিলাস
রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট অবশ্য প্রথম একটি অরাস গাড়ি কিম জং-উনকে উপহার দিয়েছিলেন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। দুই দেশের পক্ষ থেকেই তখন বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছিল। এর মানে হলো, কিম জং-উনের গ্যারেজে এখন অন্তত দুটি অরাস গাড়ি রয়েছে।
এটা বিশ্বাস করা হয় যে গাড়ি নিয়ে কিমের বিপুল আগ্রহ রয়েছে। তাঁর নিজের সংগ্রহে বেশ বড়সংখ্যক বিদেশি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। সম্ভবত এই গাড়িগুলো চোরাচালানের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় আনা হয়েছে। কারণ, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশটিতে বিলাসবহুল পণ্য রপ্তানি করা নিষিদ্ধ।
কিমকে মেবাক লিমুজিনে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি মার্সেডিজ, একটি রোলস-রয়েস ফ্যান্টম ও একটি লেক্সাস স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেলেও তাঁকে চড়তে দেখা গেছে।