বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি

সম্পদের পুনর্ব্যবহার না বাড়লে প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না, অর্থনীতি সমিতির সম্মেলনে বক্তারা

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের অবদান ১০ শতাংশের বেশি, রপ্তানিতেও শীর্ষ খাত এটি। তবে এ খাতে সম্পদের পুনর্ব্যবহার না বাড়ালে বিদ্যমান প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না। একই সঙ্গে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি বলে মনে করেন বক্তারা।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের অষ্টম অধিবেশনে এসব কথা বলেন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আজ শনিবার সকালে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ, চতুর্থ শিল্পবিল্পব, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন শীর্ষক কর্ম অধিবেশন হয়।

কর্ম অধিবেশনে ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, সারা বিশ্বে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার বাড়ছে। টেকসই উন্নয়নের জন্য সম্পদের পুনর্ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে। এদিক থেকে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে।

বিল্ড সিইও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) প্রতিবছর প্রায় ৫৮ লাখ টন বস্ত্র ফেলে দেওয়া হয়; প্রত্যেক ব্যক্তি বছরে গড়ে ১১ কেজি বস্ত্র ফেলে দেন। বিশ্বের কোথাও না কোথাও প্রতি সেকেন্ডে অন্তত এক ট্রাক বস্ত্র পুড়িয়ে বা জমিতে পুঁতে ফেলা হয়। বাংলাদেশে এ–সম্পর্কিত সঠিক তথ্য-উপাত্ত নেই। তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে, দেশে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে বছরে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এর মাত্র একটা অংশ রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা হয়; এ ক্ষেত্রে কাজ করা প্রয়োজন।

ফেরদৌস আরা বেগম আরও বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর পণ্য উৎপাদনে পরিবেশগত বিষয়গুলো প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসবে। ফলে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সম্পদের পুনর্ব্যবহার বৃদ্ধির বিকল্প নেই। পণ্য উৎপাদনের শুরুতেই এমনভাবে নকশা করতে হবে, যেন পণ্যটি ভবিষ্যতে পুনর্ব্যবহার করা যায়।

গ্রাহকের ব্যবহার–পরবর্তী পর্যায়েও রিসাইকেল করার ব্যবস্থা রাখা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন ফেরদৌস আরা বেগম। তিনি বলেন, দেশের উৎপাদকেরা বিক্রয়–পরবর্তী রিসাইকেলের বিষয়ে সেভাবে দায়িত্ব নিতে চান না। তবে উৎপাদকদের দায়িত্ব নিয়ে নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

কর্ম অধিবেশনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে কথা বলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে বিশ্ব অনেক এগিয়ে গেছে। পণ্য উৎপাদন ও পরিষেবায় পারমাণবিক ও সৌরবিদ্যুৎ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড কম্পিউটিং, ব্লক চেইন প্রভৃতি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সে তুলনায় বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। বিশেষ করে এআই ব্যবহারে বাংলাদেশের অবস্থান খুব একটা ভালো নয়; বাকি বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি।