সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার গত মাসে কমিয়েছে সরকার। তারপরও পেনশনার সঞ্চয়পত্র ছাড়া সাধারণ সঞ্চয়কারীদের জন্য নির্ধারিত পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রেই সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। এখনো এ সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এ হার অবশ্য ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে তার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফা সাড়ে ৯ শতাংশ।
কম মেয়াদে পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙালে মুনাফা আরও কম পাওয়া যাবে। নতুন নিয়মে, এখন ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্ণ মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এ ছাড়া প্রথম বছর শেষে ভাঙালে মুনাফা মিলবে সাড়ে ৯ শতাংশ, দ্বিতীয় বছর শেষে ভাঙালে মুনাফা পাওয়া যাবে ১০ শতাংশ হারে, তৃতীয় বছর শেষে মুনাফা মিলবে সাড়ে ১০ শতাংশ হারে আর চতুর্থ বছর শেষে ভাঙালে মিলবে ১১ শতাংশ হারে মুনাফা।
বর্তমানে ১০ হাজার, ২০ হাজার, ৫০ হাজার, ১ লাখ, ২ লাখ, ৫ লাখ এবং ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের পরিবার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এসব সঞ্চয়পত্র কেনা যায় জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব তফসিলি ব্যাংক ও ডাকঘর থেকে। একই জায়গা থেকে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন বা ভাঙানো যায়। একজন ব্যক্তি একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারলেও পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনা যায় ৪৫ লাখ টাকার, বাকি ৫ লাখ টাকার অন্য সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ রয়েছে।
পরিবার সঞ্চয়পত্র চালু হয় ১৯৯৭ সালে। ২০০২ সালে সরকার একবার তা বন্ধ করে দেয়। ২০১০ সাল থেকে তা আবারও চালু করা হয়। সবাই এ পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। ১৮ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী ও পুরুষ এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশি নারী ও পুরুষেরা কিনতে পারেন পরিবার সঞ্চয়পত্র।
পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা নেওয়া যায় মাসিক ভিত্তিতে। মুনাফার পরিমাণও নির্ধারণ করা আছে। যেমন ১০ হাজার টাকায় ৯৬ টাকা, ২০ হাজার টাকায় ১৯২ টাকা, ৫০ হাজার টাকায় ৪৮০ টাকা, ১ লাখ টাকায় ৯৬০ টাকা, ২ লাখ টাকায় ১ হাজার ৯২০ টাকা এবং ৫ লাখ টাকায় ৪ হাজার ৮০০ টাকা। এসব মুনাফা থেকে বাদ যাবে ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর। ১০ লাখ টাকায় মুনাফা পাওয়া যাবে ৯ হাজার ৬০০ টাকা, কিন্তু এ থেকে বাদ যাবে ১০ শতাংশ উৎসে কর।
মাসিক মুনাফা নেওয়ার পর পাঁচ বছর শেষে মূল টাকা ফেরত পাওয়া যায়। মেয়াদপূর্তির আগে নগদায়ন করলে মাসিক মুনাফা কর্তন করে বাকি অর্থ ফেরত দেয় সরকার। এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনে মেয়াদপূর্তির কত আগে তা ভাঙালে কত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে, সেটি ঠিক করা আছে। যেমন প্রথম বছর চলাকালে এক লাখ টাকা ভাঙালে কোনো মুনাফা পাওয়া যাবে না।
তবে দ্বিতীয় বছর চলাকালে ভাঙালে মুনাফাসহ পাওয়া যাবে ১ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকা। এভাবে তৃতীয় বছর চলাকালে ভাঙালে ১ লাখ ২০ হাজার, চতুর্থ বছর চলাকালে ১ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ এবং পঞ্চম বছর চলাকালে ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা পাওয়া যাবে।