এ বছর আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। আজ রোববার সকাল ১০টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি জানান, রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বরই থাকছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নির্ধারিত সময়ে যাঁরা আয়কর রিটার্ন দিতে পারবেন না, তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর অফিসে আবেদন করতে পারবেন। তবে ২ শতাংশ জরিমানার বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। গ্রাহক সঠিক সময়ে কেন রিটার্ন জমা দিতে পারেননি, তার যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে জরিমানা মওকুফ করা হবে। কমিশনারের কাছে যদি কারণ যৌক্তিক মনে না হয়, তবে জরিমানা গুনতে হবে।
উল্লেখ্য, আয়কর আইন অনুযায়ী উপ–কর কমিশনার করদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্ন জমা দিতে দুই মাস সময় দিতে পারেন। তবে করদাতাকে সেই ক্ষেত্রে ২ শতাংশ জরিমানা দিতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, গত বছরের ২৬ নভেম্বরের চেয়ে এ বছরের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন বেড়েছে ৬৩ হাজার ১৯৯ টি। তবে একই সময়ে আয়কর কমেছে ১৯৩ কোটি টাকা।
এ বছর ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত দাখিল করা রিটার্নের সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫। গত বছর একই সময়ে দাখিল করা আয়কর রিটার্ন ছিল ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৬ টি। সে হিসাবে রিটার্ন বেড়েছে ৬৩ হাজার ১৯৯ টি। এ বছর ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্নের সঙ্গে কর পরিশোধ হয়েছে ২ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে রিটার্নের সঙ্গে কর পরিশোধ হয়েছিল ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। সে হিসাবে কর পরিশোধ কমেছে ১৯৩ কোটি টাকা।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, আয়কর রিটার্ন আরও কীভাবে সহজ করা যায়, সে কাজ চলছে। এ বছর থেকে এক পাতার রিটার্ন করা হয়েছে, যাতে করদাতা সহজে রিটার্ন দিতে পারেন। করোনার কারণে এ বছর আয়কর দিবসের র্যালি হচ্ছে না। তবে আলোচনা সভা হবে জুমে। এ বছরের আয়কর দিবসে প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে স্বচ্ছ ও আধুনিক করসেবা প্রদানের মাধ্যমে করদাতাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ।
কয়েক বছর আগেও প্রতিবার রিটার্ন জমার সময় বাড়ানো হতো। কিন্তু ২০১৬ সালে আয়কর অধ্যাদেশে পরিবর্তন এনে ৩০ নভেম্বর জাতীয় কর দিবসের পর রিটার্ন জমা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সময় বাড়ানোর পথটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে আরেকটি উপায় ছিল। গত বাজেটের আগে করোনা মহামারি বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন।
সেই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এনবিআর চাইলে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের যেকোনো জরিমানা ও সুদ মওকুফ করে দিতে পারবে। বাজেট অধিবেশনে এনবিআরের এই ক্ষমতাকে আয়কর অধ্যাদেশের ১৮৪ (জি) ধারা হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। তাই এনবিআর এখন চাইলে সময় না বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে শুধু একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জরিমানা ও সুদ মওকুফ করলেই সময় বৃদ্ধির কাজটি হয়ে যাবে।
তবে এবারে সেখানে রিটার্ন জমা না দেওয়ার যৌক্তিক কারণ দেখাতে হবে। কমিশনারের কাছে যদি রিটার্ন জমা দেওয়ার কারণ যৌক্তিক মনে না হয়, তবে জরিমানা গুনতে হবে।