আজ বৃহস্পতিবারই শেষ দিন। ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমার জন্য আপনার হাতে আজকের দিনটিই আছে। আজকের মধ্যেই রিটার্ন জমার কাজ শেষ করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, আজ ব্যাংক বন্ধ। ফলে পে অর্ডার বা কর পরিশোধের কোনো কাজ করা যাবে না।
অবশ্য গত মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় করদাতারা যেন বুধবারই আয়করসংক্রান্ত কার্যক্রম সেরে ফেলেন।
করোনার কারণে এবার বিশেষ বিবেচনায় এক মাস সময় বাড়ানো হয়েছে। সেই সময়ও শেষ হচ্ছে আজ। বর্তমান আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে এনবিআরকে কিছু বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত বাজেটে জরুরি বা দুর্যোকালে সুদ মওকুফ করার ক্ষমতা দিয়ে বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। সেই ক্ষমতাবলে গত ৩০ নভেম্বর এনবিআর রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়ানো হয়।
এবার অনলাইনে রিটার্ন জমার সুযোগ না থাকায় সবাইকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর কার্যালয়ে সশরীরে গিয়ে কিংবা কর আইনজীবীর মাধ্যমে রিটার্ন জমা দিতে হবে। অনলাইনে কর দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন শুধু কর অঞ্চল-৬–এর করদাতারা।
করোনায় এবার বহু করদাতার আয়রোজগার কমেছে। ফলে অনেকের মধ্যে রিটার্ন জমার আগ্রহ কম। এমন বিবেচনায় ৩০ নভেম্বর এক মাস রিটার্ন জমার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিল। অবশ্য এর আগের দিন (২৯ নভেম্বর) এনবিআর চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘোষণা দিয়েছিলেন, রিটার্ন জমার সময় বাড়বে না। ফলে শেষ দিনে করদাতাদের ভিড় দেখা যায়। পরের দিন অবশ্য এনবিআর এক সময় বাড়ায়।
এই করোনাকালেও শেষ দিনে সময় বাড়ানোর ঘোষণার পুরোনো রেওয়াজ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি এনবিআর। অথচ ভারতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন দেওয়ার সময় থাকলেও প্রায় এক মাস আগেই তা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল ওই দেশের প্রত্যক্ষ কর কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে ৫২ লাখ ৭২ হাজার কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫ লাখের বেশি রিটার্ন দিয়েছেন। ডিসেম্বর মাসে কত রিটার্ন জমা পড়েছে, সেই হিসাব চূড়ান্ত করেনি এনবিআর।
প্রতিবছর গড়ে ২০-২২ লাখ রিটার্ন জমা পড়ে। নির্ধারিত সময়ে কোনো টিআইএনধারী যদি রিটার্ন জমা দিতে না পারেন, তাহলে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে দুই থেকে চার মাস সময় বাড়াতে পারে। সে জন্য অবশ্য নির্ধারিত করের ওপর মাসিক ২ শতাংশ সুদ গুনতে হবে।