পেট্রোবাংলার জন্য জাপানের জেরা নামক কোম্পানির কাছ থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় হবে ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
বৈঠক শেষে সিদ্ধান্তটির কথা জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বলেন, প্রতি ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি আমদানিতে খরচ হবে ১৬ দশমিক ৫০ ডলার। এমএমবিটিইউ হচ্ছে তাপের একক।
১ ফেব্রুয়ারি ক্রয় কমিটির বৈঠকেও স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। পেট্রোবাংলা খোলাবাজার থেকে এর আগে এলএনজি কিনেছিল ২০২২ সালের মে মাসে। তখন প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়েছিল ২৬ দশমিক শূন্য ৪ ডলার করে। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ফাঁকে দাম কমেছে। এদিকে ইউরোপে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম কমতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশনা দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সামনে বিদ্যুৎ খাতে দিনে ১২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। বর্তমানে সরবরাহ হচ্ছে ৯০ কোটি ঘনফুটের কম। তাই গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে হলে এলএনজি আমদানি বাড়াতে হবে।
গ্যাস-সংকটের কারণে ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। এখন পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে ২৯ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে। এলএনজি আমদানির জন্য ২০২১ সালে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়ের চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সর্বশেষ গত বছরের জুনে ২৪ দশমিক ২৫ ডলার করে একটি এলএনজি কার্গো আমদানি করে সরকার। এরপর বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়তে থাকে। সর্বোচ্চ ৭০ ডলার পর্যন্ত উঠে যায় এলএনজির দাম। সে জন্য ডলার সাশ্রয় করতে গত জুলাই থেকে খোলাবাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রাখে সরকার। এতে দেশে গ্যাসের সরবরাহ-সংকট বাড়ে এবং ব্যাহত হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন।
এদিকে চট্টগ্রামভিত্তিক সরকারি প্রতিষ্ঠান ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি ও টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের জন্য ৪৫ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসফেট কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে ক্রয় কমিটি। এতে ব্যয় হবে ২০৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
ক্রয় কমিটির বৈঠকে ‘পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায় খয়রাবাদ নদীর ওপর ৭৩০ মিটার সেতু নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজ পেয়েছে এম এম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পোদ্দার এন্টারপ্রাইজ। এ জন্য ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ১০ লাখ টাকা।