রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা

শুরু হয়েছে ঢাকা ট্রাভেল মার্ট, মিলছে পর্যটনের নানা পণ্য ও সেবা

বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে বাংলাদেশের সৌন্দর্যের কথা তুলে ধরতে হবে। মালদ্বীপের মতো দেশ এই কাজ সফলভাবে করলেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে পিছিয়ে আছে। নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সংখ্যায় বিদেশি পর্যটক দেশে আসছেন না। তবে সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগের কিছু সফলতা আছে। দেশের ভেতরে অনেকেই এখন ঘুরতে যান। তবে বিদেশিদের আনতে পারলে দেশের অর্থনীতি বিকশিত হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বিমান ঢাকা ট্রাভেল মার্ট’ শীর্ষক ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর। মেলা ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যটনের বিকাশ ঘটাতে গেলে ভালো বিক্রেতা হতে হবে। এই যে ভাষার মাস, মায়ের ভাষার জন্য আমরা প্রাণ দিয়েছি। আমাদের শহীদ মিনার আছে। এটা ভালোভাবে বিদেশিদের কাছে তুলে ধরতে পারলে অনেকে এটা দেখতে আসবেন। কিন্তু আমরা সেভাবে পারছি না। আমাদের দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত আছে। অথচ এর অনেকে জানেনই না। এসব বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। তাহলে দেশের পর্যটন এগিয়ে যাবে।’

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম পর্যটনের জন্য অনেক বড় কেন্দ্র হতে পারে। সিলেটেও অনেক জায়গা আছে। এসব পর্যটন কেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা গেলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পর্যটন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন বলেন, এই মেলা দেশের পর্যটনের বিকাশে ভূমিকা রাখবে। সরকার বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়ে এগোচ্ছে। বেসরকারি খাতবান্ধব বিভিন্ন নীতিমালা পর্যটনের বিকাশে সাহায্য করবে বলে মনে করি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেন, মেলা উপলক্ষে বিমানের সব ফ্লাইটে ১৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে বিমানের সেবা আরও উন্নত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পর্যটকবান্ধব দেশে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি। ষড়্‌ঋতুর বাংলাদেশ, তাই প্রতিটি ঋতুতে এ দেশে দেখার অনেক কিছু আছে। সেগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। এর দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে।

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, এ দেশে অনেক বিদেশি আসতে চান। কিন্তু কোনো বিদেশি বিমানবন্দরে নেমে প্রথমেই জানতে চান যাতায়াতব্যবস্থা কেমন। এ ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা একেবারে চিহ্নিত। লক্কড়ঝক্কড় বাসের জন্য ঢাকা শহরের সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য নগরপিতার কাছে আবেদন জানাই।’

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পর্যটন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা

এবারের মেলায় দেশ-বিদেশের ৮০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা তাদের পণ্য ও সেবা উপস্থাপন করছে। এসব প্রতিষ্ঠান দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ মূল্যছাড়ও দিচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ৫০ টাকা। বাংলাদেশ মনিটর ২০০২ সালে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ঢাকা ট্রাভেল মার্ট’ চালু করে। এরপর প্রতিবছর এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের মেলা ঢাকা ট্রাভেল মার্টের ১৯তম সংস্করণ।