জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পেঁয়াজ আমদানির ওপর থেকে শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে। দেশের বাজারে পণ্যটির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এনবিআর পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয়ে আজ বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, পেঁয়াজের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পেঁয়াজ আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হলো। অর্থাৎ পেঁয়াজ আমদানিতে প্রযোজ্য মোট করভার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য শতাংশ করা হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এই প্রজ্ঞাপন জারির ফলে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এখন আর কোনো ধরনের শুল্ক-কর থাকবে না। সংস্থাটি মনে করে, শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করায় দেশে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বেড়ে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে এবং এটির মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।
দেশের বাজারে এক মাস ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। খুচরা পর্যায়ে ইতিমধ্যে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা আর আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। সে জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সম্প্রতি পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে এনবিআর পেঁয়াজ আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়।
আজ বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।
পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এনবিআরকে দেওয়া চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন জানায়, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন। স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে এ চাহিদার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হয়; বাকিটা পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। পেঁয়াজ আমদানির অন্যতম উৎস হচ্ছে ভারত।
এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় প্রতিবেশী দেশটি পেঁয়াজ রপ্তানি নিরুৎসাহিত করে আসছিল। সম্প্রতি তারা পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে। তবে এখনো ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বহাল রেখেছে। ফলে তাদের কাছ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি পড়ছে। এ অবস্থায় এনবিআর পণ্যটি আমদানিতে শুল্ক–কর প্রত্যাহার করেছে।