ডিম ও মুরগি
ডিম ও মুরগি

‘যৌক্তিক দামে’ বিক্রি হচ্ছে না ডিম, মুরগি

বাজারে ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সম্প্রতি সরকারিভাবে ডিম ও মুরগির যে ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করা হয়, তার চেয়েও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। এর বাইরে বাজারে চালের দাম কমার কোনো সুখবর নেই। বরং কাঁচা মরিচ, বেগুন ও বরবটির মতো সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও নিউমার্কেট কাঁচা বাজারে ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত রোববার ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

মাসখানেক আগে বাজারে চালের দাম কেজিতে ৪-৬ টাকা বেড়েছিল। সেই দাম এখনো কমেনি। আর বাজারে এক সপ্তাহের মধ্যে আলু, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

নতুন দর অনুসারে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি সর্বোচ্চ ২৭০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। এ ছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতি ডজন ডিমের সর্বোচ্চ দাম হওয়ার কথা ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। তবে বাজারে প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রেই এর চেয়ে কিছুটা বেশি দাম দেখা গেছে।

যেমন গতকাল ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ও সাদা ডিম বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১৫৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯০ টাকা আর সোনালি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ১০ টাকা করে কম ছিল। বিক্রেতাদের ভাষ্য, বুধবারের তুলনায় গতকাল পাইকারিতে ব্রয়লার মুরগির দাম ৪-৫ টাকা করে কমেছে; তবে খুচরা পর্যায়ে দাম কমেনি।

মাসখানেক আগে বাজারে চালের দাম কেজিতে ৪-৬ টাকা বেড়েছিল। সেই দাম এখনো কমেনি। আর বাজারে এক সপ্তাহের মধ্যে আলু, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

দাম বেড়েছে বেগুন-বরবটির

আগের সপ্তাহের তুলনায় বেগুন, বরবটি ও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আমদানি করা কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ২০০-২২০ টাকা দরে। এ ছাড়া বেগুন ৮০-১১০ টাকা ও বরবটি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এসব পণ্যের দাম আগের সপ্তাহে কেজিতে ২০-৩০ টাকা কম ছিল। অন্যান্য সবজির দাম আগের মতোই রয়েছে।

মাসখানেক আগে বাজারে চালের দাম কেজিতে ৪-৬ টাকা বেড়েছিল। সেই দাম এখনো কমেনি। আর বাজারে এক সপ্তাহের মধ্যে আলু, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। গতকাল প্রতি কেজি আলু ৫৫-৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১১০-১১৫ টাকা, আদা ২৪০-২৬০ টাকা ও রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারে মাছ-মাংসের দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই। তবে রুই, চিংড়ি ও পাঙাশ মাছের দাম কেজিতে ৩০-৫০ টাকা করে বেড়েছে। গতকাল ২ কেজি আকারের চাষের রুই ৩৫০-৩৮০ টাকা, মাঝারি আকারের চাষের চিংড়ি ৮০০-৯০০ টাকা ও পাঙাশ মাছ ২৩০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া এক কেজি আকারের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৫০০-১৭০০ টাকা দরে।

আমরা খাত–সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ডিম ও মুরগির একটা যৌক্তিক দাম প্রস্তাব করেছি। বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার তারতম্যে এ দামে সামান্য কিছু পার্থক্য হতে পারে। তবে এসব পণ্যের উৎপাদন খরচ কমানো গেলে দাম এমনিতে কমে আসবে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক রেজা আহমেদ খান

সরকার নির্ধারিত ‘যৌক্তিক দামে’ ডিম ও মুরগি কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক ক্রেতা। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাজ্জাদ আলম বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামে যদি পণ্য কিনতে না পারি, তাহলে এই দাম বেঁধে দেওয়ার কী মানে থাকে।’

যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক রেজা আহমেদ খান বলেন, ‘আমরা খাত–সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ডিম ও মুরগির একটা যৌক্তিক দাম প্রস্তাব করেছি। বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার তারতম্যে এ দামে সামান্য কিছু পার্থক্য হতে পারে। তবে এসব পণ্যের উৎপাদন খরচ কমানো গেলে দাম এমনিতে কমে আসবে।’