অ্যামচেমের মধ্যহ্নভোজসভায় মূল বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির বাংলাদেশ মিশনপ্রধান রিড জে এশলিম্যান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)। সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। গতকাল রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে
অ্যামচেমের মধ্যহ্নভোজসভায় মূল বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির বাংলাদেশ মিশনপ্রধান রিড জে এশলিম্যান (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)। সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। গতকাল রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে

অ্যামচেমের ভোজসভায় অভিমত

দুর্নীতি ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় বাধা বাংলাদেশে

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে দুর্নীতিকে বড় বাধা বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির মিশন পরিচালক রিড এশলিম্যান। তিনি বলেন, এ দেশে বিভিন্ন ধরনের সেবা পেতেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়। তাই দুর্নীতি বন্ধে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ বা অ্যামচেমের মাসিক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় রিড এশলিম্যান এসব কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ ভোজসভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বাংলাদেশের উত্তরণ: ইউএসএআইডির সঙ্গে অংশীদারির অগ্রগতি’ শীর্ষক এ ভোজসভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। সভায় ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর জন ফে, অ্যামচেমের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামালসহ বেশ কয়েকটি দেশের কয়েকজন কূটনীতিক ও অ্যামচেমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দুর্নীতি প্রসঙ্গে এশলিম্যান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় প্রয়োজনীয় সেবা পেতে দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে শতভাগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না। অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জ্বালানিসহ বেশ কিছু খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই বাড়ানোর অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সম্ভাবনার চেয়ে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক কম। দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সেবা কাগজবিহীন করার পরামর্শ দেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, এশিয়ার মধ্যে ইউএসএআইডির সবচেয়ে বেশি কর্মসূচি রয়েছে বাংলাদেশে। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে অনুষ্ঠানের মূল বক্তা ইউএসএআইডির মিশন পরিচালক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে এ দেশের বেসরকারি খাতকে তাঁরা সহযোগিতা করতে চান। তিনি জানান, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বেসরকারি খাতকে সহযোগিতার জন্য বছরে তাঁদের ২০ কোটি ডলারের বাজেট রয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন ধরনের মানবিক সহায়তায় বছরে ১৪ কোটি ডলার খরচ করে সংস্থাটি।

মূল বক্তব্য শেষে ভোজসভায় অংশ নেওয়া সুধীজনদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন ইউএসএআইডির মিশনপ্রধান। এ সময় উপস্থিত একজন তাঁর কাছে জানতে চান, আগামী পাঁচ বছর এ দেশের ব্যবসায়ীদের করণীয় কী—জবাবে রিড এশলিম্যান বলেন, দুর্নীতি কমাতে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের সঙ্গে সংলাপ বাড়াতে হবে।

এদিকে সম্প্রতি ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সহায়তায় গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) করা এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক নম্বর সমস্যা দুর্নীতি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৬৮ শতাংশ ব্যবসায়ী উচ্চমাত্রার দুর্নীতির এ সমস্যাকে এক নম্বর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।