ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসে ঢাকার বাজারের মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশই ছিল দুই হোটেল কোম্পানির শেয়ারের।
ঈদের ছুটি শেষে ইতিবাচক ধারায় ফিরল দেশের শেয়ারবাজার। ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল সোমবার ২৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫২ পয়েন্টে। তাতে সূচকটি পৌঁছে গেছে গত দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। এর আগে সর্বশেষ গত ৯ মার্চ ডিএসইএক্স সূচকটি ৬ হাজার ২৬০ পয়েন্টের সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল।
ঈদের ছুটি শেষে গতকাল শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গেছে হোটেল কোম্পানির শেয়ারে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানি। সেগুলো হলো রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের মালিকানায় থাকা ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট এবং কক্সবাজারে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। ঢাকার বাজারের গতকালের লেনদেনের ১৮ শতাংশই ছিল এ দুই কোম্পানির।
ঢাকার বাজারে গতকাল ইউনিক হোটেল ও সি পার্ল বিচ রিসোর্টের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৮ কোটি টাকা, যা ডিএসইর ৫৫৩ কোটি টাকার মোট লেনদেনের প্রায় ১৮ শতাংশ। গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ইউনিক হোটেল, এদিন কোম্পানিটির ৫৬ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়।
আর লেনদেনের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। কোম্পানিটির লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় সোয়া ৪১ কোটি টাকা। ডিএসইতে সোমবার ইউনিক হোটেলের প্রতিটি শেয়ারের দাম ৫ টাকা ৬০ পয়সা বা সোয়া ৭ শতাংশ এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ারের দাম ১৬ টাকা বা সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়েছে।
সম্প্রতি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানু-মার্চ, ২৩) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট হোটেল কর্তৃপক্ষ। তাতে বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা মুনাফা হয়েছে ৩ টাকা ১৩ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৫ পয়সা।
সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে হোটেলটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা প্রায় ৯ গুণ বেড়েছে। আর এক বছরে বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সাড়ে ৬ গুণ বেড়ে ৪৭ টাকা থেকে ৩০২ টাকা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।
তবে আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির মুনাফা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় হোটেল ব্যবসায় আবারও চাঙাভাব ফিরেছে। হোটেলের পাশাপাশি কোম্পানিটির মালিকানায় থাকা ওয়াটার পার্ক, পর্যটনে নিয়োজিত জাহাজ ও রেস্টুরেন্টও বেশ ভালো ব্যবসা করেছে। এ কারণে মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি ৩৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল মাত্র ৪ কোটি টাকা।
এদিকে ইউনিক হোটেল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি জানিয়েছে, তাদের মালিকানায় থাকা বিদ্যুৎ কোম্পানি মেঘনাঘাটে ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার ঋণসহায়তা দিচ্ছে বিদেশি একটি কোম্পানি। ইতিমধ্যে এ ঋণের কয়েকটি কিস্তিও পেয়েছে কোম্পানিটি। এ খবরে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, উল্লিখিত দুই কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বাজারে নানা ধরনের গুজব রয়েছে। এসব গুজব বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বাজারসংশ্লিষ্টদের কারও কারও দুই কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।