শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার

চার ব্রোকারেজ হাউসের প্রতারণা

ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৮ হাজার বিনিয়োগকারী পাচ্ছেন ২৫ কোটি টাকা

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চারটি ব্রোকারেজ হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সাড়ে আট হাজার বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হয়েছে।

এ জন্য ডিএসইর বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিল থেকে ৪টি ব্রোকারেজ হাউসের ৮ হাজার ৫৮১ জন বিনিয়োগকারীর জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অর্থ থেকে গতকাল সোমবার দুই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিপূরণের অর্থ হস্তান্তর করা হয়েছে।

যেসব ব্রোকারেজ হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়া হচ্ছে সেগুলো হলো, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, বাঙ্কো সিকিউরিটিজ, তামহা সিকিউরিটিজ ও শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোং। এ চারটি ব্রোকারেজ হাউসের মালিকেরা নানা অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৯৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। বর্তমানে এসব ব্রোকারেজ হাউসের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, চারটি ব্রোকারেজ হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দুই দফায় প্রায় সাড়ে ৪২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর আগে গত ২৯ জুন প্রথম দফায় ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ, বাঙ্কো সিকিউরিটিজ ও তামহা সিকিউরিটিজের এক হাজারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছিল।

তখন ওই অর্থ বিতরণ করা হয়েছিল ব্রোকারেজ হাউসগুলো থেকে আদায় করা অর্থ থেকে। এবার প্রথমবারের মতো ডিএসইর বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিল থেকে ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য।

ডিএসই জানিয়েছে, চারটি ব্রোকারেজ হাউসের যেসব বিনিয়োগকারী ১ অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ চেয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন, তাঁদের মধ্যেই এ অর্থ বিতরণ করা হবে। তবে অনেক বিনিয়োগকারীর আবেদন পর্যাপ্ত প্রমাণপত্রের অভাবে যাচাই–বাছাইয়ে বাতিল হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিএসইর তহবিল থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ পাবেন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা। এ ব্রোকারেজ হাউসের ৪ হাজার ৩৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সোয়া ৫ কোটি টাকা। এর বাইরে বাঙ্কো সিকিউরিটিজের ১ হাজার ৮৪৩ জন বিনিয়োগকারীর জন্য ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, তামহা সিকিউরিটিজের ৪৫১ বিনিয়োগকারীর জন্য ৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ও শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোংয়ের ২ হাজার ২৫৩ জন বিনিয়োগকারীর জন্য ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ডিএসইর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তাদের তহবিল থেকে দেওয়া ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ৮ হাজার ৫৮১ জন বিনিয়োগকারীর মধ্যে আনুপাতিক হারে ক্ষতিপূরণ বাবদ বিতরণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে একজন বিনিয়োগকারী তাঁর আর্থিক ক্ষতির বিপরীতে ১৫ দশমিক ৪০ শতাংশ হারে ক্ষতিপূরণ পাবেন। সেই হিসাবে কোনো বিনিয়োগকারীর যদি এক কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

ডিএসই গতকাল দুই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করেছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার আবদুল হালিম, ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ টি এম তারিকুজ্জামান, প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ প্রমুখ।