শেয়ারবাজারের জন্য আবারও সুখবর দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল সোমবার এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। নতুন এ নির্দেশনার ফলে সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয় করতে এখনই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে কোনো শেয়ার বিক্রি করতে হবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গত ৩১ আগস্টভিত্তিক হিসাবে যেসব ব্যাংকের পুঁজিবাজারে সীমার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে, সেসব ব্যাংক এ বিনিয়োগ সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে আগামী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবে।
শেয়ারবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে মন্দাভাব চলছে। তাতে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ শেয়ারের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থার বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে নেমে এসেছে। ফলে অনেক কোম্পানির লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাজারে বড় ধরনের ক্রেতাসংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শেয়ার বিক্রি করলে বাজারে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আবার ক্রেতা না থাকায় চাইলেও অধিক পরিমাণ শেয়ার বিক্রির সুযোগ নেই। এ কারণে পুঁজিবাজারের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমার অতিরিক্ত শেয়ার সমন্বয়ের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্টরা জানান।
এর আগে গত আগস্টে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের হিসাব শেয়ারের ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ–সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এখন থেকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ধারণকৃত শেয়ারের ক্রয়মূল্যকে ‘বাজারমূল্য’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। শেয়ার, করপোরেট বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য পুঁজিবাজার নিদর্শনপত্রের বাজারমূল্য হিসাবায়নের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।
বর্তমানে বাজারে অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম ব্যাংকের ক্রয়মূল্যের নিচে নেমে গেছে। ফলে কোনো কোনো ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমার বেশি হয়ে গেছে। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, কোনো একটি ব্যাংক ৩০ টাকায় কোনো একটি কোম্পানির শেয়ার কিনেছে।
ওই কোম্পানির বাজারমূল্য এখন ১৫ টাকা। ফলে বাজারমূল্য কমলেও ব্যাংকের বিনিয়োগসীমায় কোনো হেরফের হচ্ছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে তাই বিনিয়োগসীমা সমন্বয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে। শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগসীমা সমন্বয়ের জন্য শেয়ার বিক্রির চাপ তৈরি হবে না।