পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শুভেচ্ছাদূত থেকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বিএসইসির কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ছিলেন বিএসইসির ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের’ শুভেচ্ছাদূত। ২০১৭ সালে সাকিব আল হাসানকে এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করে বিএসইসি। ওই বছরের অক্টোবরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাকিবকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বিএসইসির সঙ্গে যুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই সময় বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন এম খায়রুল হোসেন।
পরে বিএসইসির নেতৃত্ব বদল হয়ে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত–উল–ইসলামের নেতৃত্বে পুনর্গঠন করা হয়। ২০২০ সালে শিবলীর নেতৃত্বে বিএসইসি পুনর্গঠন হলেও সাকিব আল হাসানকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বহাল রাখা হয়। শিবলী রুবাইয়াতের সময়ে শেয়ারবাজারের একজন আলোচিত বিনিয়োগকারী হিসেবেও আত্মপ্রকাশ ঘটে সাকিব আল হাসানের। শেয়ারবাজারের আলোচিত কারসাজিকারক আবুল খায়ের হিরুর সঙ্গে মিলে শেয়ারবাজারের বড় বিনিয়োগকারী হয়ে যান এই ক্রিকেটার। গত চার থেকে পাঁচ বছরে শেয়ারবাজারে যেসব শেয়ার নিয়ে আবুল খায়ের হিরু সবচেয়ে বেশি কারসাজির ঘটনা ঘটিয়েছেন, এসব কোম্পানির শেয়ারে সাকিবেরও বিনিয়োগ ছিল। তবে কারসাজির দায়ে হিরুকে জরিমানা করা হলেও সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে কারসাজির কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে সাকিবকে নিয়ে নানা মহলে নানা কারণে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তাঁকে শুভেচ্ছাদূতের দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাকিবকে নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে তাঁকে হত্যা মামলার আসামিও করা হয়েছে। এসব কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে তাঁকে শুভেচ্ছাদূতের দায়িত্বে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
জানা গেছে, সাকিব আল হাসানকে শুভেচ্ছাদূত করার পর তাঁকে দিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বিষয়ে বিজ্ঞাপনও বানিয়েছিল বিএসইসি। দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের প্রসারে সেই বিজ্ঞাপন প্রচারও করা হতো।