অনাদায়ি ঋণ সমন্বয়ের তাগিদ, পতন বাজারে

শেয়ারবাজার
গ্রাফিকস: প্রথম আলো

শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউসগুলোর বিতরণ করা অনাদায়ি ঋণ ডিসেম্বরের মধ্যে সমন্বয়ের নির্দেশনা দিয়েছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ নির্দেশনা দিয়েছে ডিএসই।

১৮ মে ডিএসইর পক্ষ থেকে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা সংস্থাটির সদস্যভুক্ত সব ব্রোকারেজ হাউসে পাঠানো হয়েছে। ওই নির্দেশনা জারির পর দুই দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়েছে। দুই দিনই বাজার ছিল কিছুটা নেতিবাচক ধারায়। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অনাদায়িঋণ (নেগেটিভ ইকুইটি) আদায় করতে হলে বাজারে বিক্রির চাপ বেড়ে যাবে।

ঋণগ্রস্ত অনেক বিনিয়োগকারীর শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রির আওতায় পড়বে। এ আতঙ্কে গত দুই দিনে অনেকে শেয়ার বিক্রি করেছেন। আবার সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। তাতে বাজারে শেয়ারের দাম ও লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শেয়ারবাজারে অনাদায়ি ঋণের বিষয়টি ২০১০ সাল থেকে ঝুলে আছে। ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের আগে ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে। তাতে ফুলেফেঁপে ওঠে বাজার। একপর্যায়ে ধস নামে।

এতে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হন। ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশই মূলধন হারিয়ে বাজার ছেড়ে চলে যান। এতে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ করা ঋণ আটকে যায়। এসব ঋণ আদায় নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। বাজারেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমন এক পরিস্থিতিতে অনাদায়ি ঋণ আদায়ে বারবার সময় বাড়ায় বিএসইসি।

সর্বশেষ গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত বিএসইসির এক সভায় আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর অনাদায়ি ঋণ সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন ডিএসইর পক্ষ থেকে অনাদায়ি ঋণ সমন্বয়ের সময়সীমার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহে ঢাকার শেয়ারবাজারে বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। টানা কয়েক দিন লেনদেনেও আধিপত্য ছিল বিমা কোম্পানিগুলোর। দাম বাড়তে থাকায় এসব শেয়ারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ বেড়ে যায়। অনেকে নতুন করে বিমার শেয়ারে বিনিয়োগ করেন।

কিন্তু গত দুই দিনে বিমা খাতের শেয়ারের মূল্য সংশোধিত হওয়ায় অনেকের বিনিয়োগ আটকে যায়। ফলে লেনদেনও কমে গেছে। ঢাকার বাজারে গতকাল সোমবার দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ৮টিই ছিল বিমা কোম্পানি। তবে হাতে গোনা যে কটি বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, সেগুলোর মধ্যে ২টি ছিল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায়।