শেয়ারবাজারের পতন থামছেই না। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবারও দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ারের দর হারানোর ফলে এই দরপতন হয়।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন ৫৫ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ৫ হাজার ১১৪ পয়েন্টে। গত প্রায় সাড়ে চার মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইএক্সের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে সর্বশেষ গত ১২ জুন ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৮৩ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটিও গতকাল ২০০ পয়েন্ট বা সোয়া ২ শতাংশের বেশি কমেছে।
শেয়ারবাজারের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে গতকালের বড় ধরনের দরপতনের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল স্কয়ার ফার্মা, ইসলামী ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসি, গ্রামীণফোন ও রেনাটার। এই পাঁচ কোম্পানির শেয়ারের বাজারমূল্য কমায় সম্মিলিতভাবে ডিএসইএক্স সূচকটি কমেছে ৪১ পয়েন্ট। এর মধ্যে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের বাজারমূল্য ৭ টাকা কমে যাওয়ায় তাতে সূচকটি কমেছে ১৮ পয়েন্ট। এককভাবে সূচকের পতনে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের দরপতনই গতকালের বাজারে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টানা দরপতনের কারণে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আস্থাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এর ফলে বাজারে ক্রেতার সংকট দেখা দিয়েছে। তার বিপরীতে প্রতিদিনই ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়ছে। বাজার যত নিচে নামছে, ফোর্সড সেলের চাপও তত বাড়ছে।
শেয়ারের দাম নির্দিষ্ট একটি সীমার নিচে নেমে গেলে ঋণ সমন্বয়ের জন্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ারবাজারে এটি ফোর্সড সেল হিসেবে পরিচিত।
এদিকে বাজারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি হওয়ায় দরপতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমছে। ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩০৬ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৬ কোটি টাকা কম।