শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ গ্রুপের দুটি কোম্পানি একীভূত হতে যাচ্ছে। গ্রুপটির পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আলিফ নামের দুই কোম্পানি মিলে শেয়ারবাজারে এক কোম্পানি হয়ে যাবে। আজ সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যেহেতু দুই কোম্পানি একে অপরের সঙ্গে একীভূত হবে, তাই দুই কোম্পানির পক্ষ থেকেই আলাদা আলাদাভাবে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। আলিফ গ্রুপ জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত একই গ্রুপের অপর কোম্পানি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে একীভূত করা হবে। তবে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হলেও কীভাবে কোম্পানি দুটির শেয়ারের ভাগবাঁটোয়ারা হবে, তা জানানো হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং যদি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে একীভূত হয়, তাহলে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শেয়ারধারীদের মধ্যে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দিতে হবে। আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের কয়টি শেয়ারের বিপরীতে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের কয়টি শেয়ার দেওয়া হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
জানতে চাইলে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের কোম্পানি সচিব মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাত্রই পর্ষদ দুই কোম্পানিকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কীভাবে এ কাজটি করা হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সার্বিক অবস্থা বিচার–বিশ্লেষণ করে পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং—এ দুই কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের বাজারমূল্য বেশি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের। আজ ডিএসইতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের সবশেষ বাজারমূল্য ছিল ৮০ টাকা ৭০ পয়সা। আর আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ারের বাজারমূল্য মাত্র ১৩ টাকা ৩০ পয়সা। দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। ফলে এটির বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কেনাবেচা করতে পারছেন না।
২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তৎকালীন সিএমসি কামাল কোম্পানিটি কিনে নেয় আলিফ গ্রুপ। সিএমসি কামাল ছিল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পারিবারিক কোম্পানি। অর্থমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সেটির মালিকানা কিনে নেয় আলিফ গ্রুপ। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলেরও মালিকানায় যুক্ত হয় আলিফ গ্রুপ।
এরপর ২০১৭ সালে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মার মালিকানা কেনারও উদ্যোগ নেয় আলিফ গ্রুপ। এ জন্য সেন্ট্রাল ফার্মার উদ্যোক্তাদের সঙ্গে চুক্তিও করেছিল কোম্পানিটি। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেন্ট্রাল ফার্মা কিনে নেওয়ার প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে আলিফ গ্রুপ।