দেশের ইস্পাত খাতের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বিএসআরএম স্টিলের নতুন কারখানা উৎপাদনে আসছে। আগামী ১ জানুয়ারি নতুন এ কারখানায় বাণিজ্যিকভাবে পণ্য উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হবে। বর্তমানে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে। কোম্পানিটি আজ বুধবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিজস্ব শিল্পাঞ্চলে নতুন এ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ করা হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২২ সালে কারখানাটি স্থাপনের কাজ শুরু হয়। নতুন এ কারখানায় বসানো হয়েছে ইউরোপের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। অবশ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাতে কারখানা স্থাপন ও উৎপাদন শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব ঘটেছে।
বিএসআরএম স্টিল জানায়, নতুন কারখানার বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ছয় লাখ টন। এতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হলে বিএসআরএম স্টিলের বার্ষিক মোট উৎপাদন সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ২৪ লাখ টনে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যমান দুটি কারখানায় বছরে ১৮ লাখ টন রড উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। রড কারখানার পাশাপাশি রড তৈরির কাঁচামাল বিলেট তৈরির কারখানাও রয়েছে বিএসআরএমের। প্রতিষ্ঠানটির বিলেট তৈরির সক্ষমতাও বছরে ২৪ লাখ টন। কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নতুন কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বাজারে এলে কোম্পানিটির ব্যবসা বড় হবে। সেই সঙ্গে ইস্পাতের বাজারে বিএসআরএমের বাজার অংশীদারি বৃদ্ধি পাবে।
জানতে চাইলে বিএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) তপন সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের ইস্পাতের বাজারে বিএসআরএমের হিস্যা বা অংশ ২৫ শতাংশের মতো। নতুন কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বাজারে এলে আমাদের বাজার অংশীদারি ১০ শতাংশের মতো বেড়ে ৩৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করছি। বাজার অংশীদারি বাড়লে স্বাভাবিকভাবে ব্যবসাও বাড়বে।’
সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিএসআরএম স্টিল ৮ হাজার ২৭১ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এই কোম্পানি মুনাফা করেছিল ২৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা সাড়ে ২৭ শতাংশ বেড়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বিএসআরএম স্টিল, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৪ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৫৬ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের ৪৬ কোটি টাকার চেয়ে ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।