দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন আবারও আড়াই শ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসে গতকাল বুধবার ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪৬ কোটি টাকা, যা গত ১৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বাজারে সর্বনিম্ন ২৩১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে গতকাল আবারও লেনদেন শুরু হয় শেয়ারবাজারে। ফলে এদিন বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ছিল কম। এ কারণে শেয়ারেরও হাতবদল হয়েছে কম। যদিও এদিন সূচক বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল প্রায় ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৬১ পয়েন্টে। তবে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম থাকায় লেনদেন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।
ঈদের ছুটির আগে সর্বশেষ কার্যদিবসে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার বাজারে প্রায় ১০ কোটি শেয়ার ও ইউনিটের হাতবদল হয়েছিল। গতকাল হাতবদল হওয়া শেয়ার ও ইউনিটের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩৮ লাখে। সেই হিসাবে ঈদের ছুটির আগে ও পরের কার্যদিবসের মধ্যে হাতবদল হওয়া শেয়ার ও ইউনিটের পরিমাণ কমেছে আড়াই কোটির বেশি। সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচার আদেশ কমেছে প্রায় ১৮ হাজার বা ১৮ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচার আদেশ ছিল ৯৯ হাজার ৪৭৯টি। গতকাল তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮২ হাজারে।
নিয়ম অনুযায়ী, একজন বিনিয়োগকারী যখন শেয়ার কেনেন বা বিক্রি করেন, তার বিপরীতে তাঁকে ক্রয় বা বিক্রয়াদেশ জমা দিতে হয়। যখন এই ক্রয় বা বিক্রয়াদেশ নিষ্পন্ন হয়, তখন সেটি সফল আদেশ হিসেবে নথিভুক্ত হয়। যেসব ক্রয় বা বিক্রয়াদেশ নিষ্পন্ন হয় না, সেগুলোকে নথিভুক্ত করা হয় না। একটি বিক্রয়াদেশ যখন সফল হয়, যখন সমপরিমাণ শেয়ারের ক্রয়াদেশ মিলে যায়। তাই ডিএসই কর্তৃপক্ষ ক্রয় বা বিক্রয়াদেশের যেকোনো একটিকে সফল আদেশ হিসেবে বিবেচনায় নেয়।
এদিকে, শেয়ারবাজারে গতকাল লেনদেন ও সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা ছিল ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর। শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওষুধ খাতের চার কোম্পানির কারণেই এদিন ডিএসইএক্স সূচকটি বেড়েছে প্রায় ২৩ পয়েন্ট। কোম্পানি চারটি হলো স্কয়ার ফার্মা, বীকন ফার্মা, রেনাটা ও কোহিনূর কেমিক্যালস। এর মধ্যে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের প্রায় ৫ টাকা বা আড়াই শতাংশ মূল্যবৃদ্ধিতে ডিএসইএক্স সূচকটি বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। আর বীকন ফার্মার ১৩ টাকা বা সাড়ে ৮ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধিতে সূচকটি বেড়েছে ৭ পয়েন্টের বেশি। এ ছাড়া রেনাটার সাড়ে ৮ টাকা এবং কোহিনূরের শেয়ারের ২৫ টাকা মূল্যবৃদ্ধিতে সূচকটি ২ পয়েন্ট করে ৪ পয়েন্ট বেড়েছে।
ঢাকার বাজারে বুধবার খাতভিত্তিক লেনদেনেও শীর্ষ ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলো। গতকাল এ খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ১৮ শতাংশ।