বিমা খাতের কোম্পানি সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কী হচ্ছে, এটাই এখন শেয়ারবাজারে আলোচনার কেন্দ্রে। এ আলোচনার কারণ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। নতুন তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির শেয়ারের দাম মাত্র ২২ কার্যদিবসে ৭০০ শতাংশ বা ৬৯ টাকা বেড়েছে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও পদ্ধতিতে কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ১৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। সে জন্য আইপিওতে ১ কোটি ৬০ লাখ শেয়ার বিক্রি করে। প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করা হয় ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে। ১০ টাকার সেই শেয়ারের বাজারমূল্য গতকাল দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ২০ পয়সায়। শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয় গত ৭ নভেম্বর। এরপর থেকে প্রতি কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ করে বেড়েছে। শুরুর দিকে আইপিও শেয়ারধারীরা খুব বেশি শেয়ার বিক্রি করেননি। ফলে বাজারে একধরনের চাহিদা তৈরি হয়। কিন্তু গত কয়েক দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির প্রায় ৮৮ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রতিদিন কোম্পানিটির ১০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা বাজারে।
একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে কারসাজির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আইপিও শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি ঘটাতে বেশ কয়েকজন কারসাজিকারী সক্রিয় রয়েছেন। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন আইপিও শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছেন তাঁরা। চক্রটি আইপিও শেয়ারের দাম বাড়াতে লেনদেন শুরুর দিন থেকে বিপুল শেয়ারের ক্রয়াদেশ দেয়। তাতে বিক্রেতারা শেয়ার বিক্রি করেন না। এভাবে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে শেয়ার কিনে নেন তাঁরা। আর প্রতিদিন দাম বাড়তে দেখে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনেকে ওই শেয়ার কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। তারই একপর্যায়ে সব শেয়ার বিক্রি করে দেন কারসাজিকারকেরা। এরপর দাম কমতে শুরু করে। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসইতে গতকাল সোমবার সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্সের ৩৬ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটি ছিল চতুর্থ অবস্থানে। দিন শেষে ডিএসইতে এটির শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৮ কোটি টাকা। এদিকে টানা মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানিটিকে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠির জবাবে গতকাল কোম্পানিটি জানিয়েছে, এভাবে টানা মূল্যবৃদ্ধির মতো কোনো অপ্রকাশিত তথ্য তাদের হাতে নেই।