তামহা সিকিউরিটিজের অন্যতম মালিক হারুনুর রশীদকে বিচারের আওতায় এনে টাকা অথবা শেয়ার ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্রোকারেজ হাউসটির প্রতারণার শিকার বিনিয়োগকারীরা।
আজ বুধবার ঢাকার পল্টনের ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।
বিনিয়োগকারীদের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাতের অভিযোগে গত ২৯ নভেম্বর শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস তামহা সিকিউরিটিজের লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের উদ্দেশে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘যেখানে অর্থের নিরাপত্তা থাকবে না, সেখানে মানুষ বিনিয়োগ করবে না। আমাদের বাঁচান, পুঁজিবাজারকে বাঁচান।’
বিনিয়োগকারীদের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাতের অভিযোগে গত ২৯ নভেম্বর শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস তামহা সিকিউরিটিজের লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। তবে এ ঘটনার জন্য ডিএসইর দুর্বলতাকে দায়ী করেন বিনিয়োগকারীরা।
তামহা সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ গ্রাহকদের প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে ডিএসইর এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তামহা সিকিউরিটিজ জালিয়াতি করে আসছিল অনেক দিন ধরেই। বিএসইসি ও ডিএসইর তদারকি ব্যবস্থা ভালো থাকলে এ ধরনের জালিয়াতি ঘটত না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফখরুল ইসলাম নামের একজন বিনিয়োগকারী। আরও বক্তব্য দেন বিনিয়োগকারী রওশন আরা ও মজিবুর রহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ব্রোকারেজ হাউসটি প্রায় দুই হাজার গ্রাহকের শেয়ার ও জমাকৃত টাকার হিসাব রাখতে দুটি পৃথক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে আসছিল। একটি দিয়ে প্রকৃত তথ্য এবং অন্যটি দিয়ে ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করত হাউসটি।
আরও বলা হয়, ডিএসই এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) যথাযথ তদারকির অভাবেই বিনিয়োগকারীরা আজ পথে বসেছেন। তামহা সিকিউরিটিজ জালিয়াতি করে আসছিল অনেক দিন ধরেই। বিএসইসি ও ডিএসইর তদারকি ব্যবস্থা ভালো থাকলে এ ধরনের জালিয়াতি ঘটত না।
ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারী ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তামহা সিকিউরিটিজ কখনো ১০ দিন, কখনো ১৫ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আসছিল। কিন্তু সমাধান হয়নি। বিএসইসি ও ডিএসই থেকেও কোনো আশ্বাস মিলছে না। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হারুনুর রশীদ এখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য অফিসের কর্মচারীদের ওপর দোষ দিয়ে তিনিও ডিএসইতে অভিযোগ করেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হয়েছে। আমরা মনে করি এটা তাঁর চালাকি হতে পারে।’
আরেক ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারী মজিবুর রহমান (পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক কর্মচারী) বলেন, ছেলে ওবায়দুর রহমান দেখাশোনা করতেন, তাঁর ১৩ লাখ টাকার বিনিয়োগ। চাকরির পেনশনের টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন। এখন তাঁর টাকা ও শেয়ার নাই হয়ে গেছে। প্রতিবন্ধী একটি মেয়েকে নিয়ে এখন সংসার চালানোই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
বিএসইসির অনুরোধে গত ৫ জানুয়ারি তামহা সিকিউরিটিজের এমডি মো. হারুনুর রশীদ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ১০টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।