মূল্যস্ফীতি কমেছে, তবে খাদ্যে তা এখনো ১০ শতাংশের বেশি

দেশে মূল্যস্ফীতি আরও কমেছে। সেপ্টেম্বরে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের ওপরে থাকলেও তা আগের মাসের তুলনায় কমেছে। গত মাসে এই হার ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এ নিয়ে টানা দুই মাস মূল্যস্ফীতি কমল।

আজ বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হয়েছে। গত আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জুলাইয়ে দেশে মূল্যস্ফীতি হয় ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা ছিল গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সেপ্টেম্বরে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি উভয়ই কমেছে। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর আগের মাসে ছিল ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগস্টে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি হওয়ার অর্থ হলো, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যে পণ্য ও সেবা কিনতে ১০০ টাকা খরচ হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তার মূল্য হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সা।

গত দেড় বছরের বেশি সময় চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, মুরগি, গরুর মাংস, সবজি, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশ চাপে পড়েন। কিছুদিন ধরে চালের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে ডিমের ডজন ১৭০ টাকায় উঠেছে। অন্যদিকে বাজারে সবজির দামও এখনো বাড়তি।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এক বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে। মূল্যস্ফীতি একধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়। আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি হলে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে।

কয়েক বছর ধরে বিবিএসের মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে একধরনের সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন অর্থনীতিবিদেরা। তাঁদের মতে, সরকারি পরিসংখ্যানে মূল্যস্ফীতির যে হিসাব দেওয়া হচ্ছিল, বাস্তবে তা আরও বেশি ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর চিত্র পাল্টে যায়। জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির হার বেশ অনেকটা বেড়ে যায়। বর্তমান সরকারের নীতিনির্ধারকের দাবি, বিবিএস এখন মূল্যস্ফীতির সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে।