কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র এক দিন। স্বাভাবিকভাবেই বাজারে বেড়েছে মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত গাছের গুঁড়ি বা ‘খাইট্টা’ ও হোগলার বেচাকেনা। রাজধানীর বিভিন্ন বড় বাজার তো বটেই, অধিকাংশ পাড়া-মহল্লাতেও বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। সাধারণত মৌসুমি ব্যবসায়ীরাই এসব পণ্য বিক্রি করেন।
বিক্রেতারা বলেন, কোরবানির ঈদের সময় তিন-চার দিনের জন্য ‘খাইট্টা’ ও হোগলার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শুকনা ও কাঁচা ঘাস, বাঁশের চাটাই, ঝুড়ি ও ঝাড়ুও বেশ বিক্রি হয়।
সাধারণত কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস কেটে টুকরা করতে কাঠের গুঁড়ি ব্যবহার হয়। প্রচলিত ভাষায় এটি ‘খাইট্টা’ হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া মাংস পরিষ্কার স্থানে রাখা ও ভাগ করার জন্য লাগে হোগলাপাতার চাটাই, হোগলা নামেই যা বহুল পরিচিত।
বিক্রেতারা বলেন, সারা বছর কসাইখানায় এসব পণ্য ব্যবহার হয়। তবে কোরবানি এলে এসবের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এ সময় সারা দেশেই অনেক পশু জবাই হয়। কোরবানিদাতাদের অধিকাংশই খাইট্টা ও হোগলা কেনেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ, গরু-ছাগলসহ কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ পশু।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের মোড়ে মোড়ে ‘খাইট্টা’, হোগলা ও ঘাস বিক্রির অস্থায়ী দোকান। বাজারে আকারভেদে প্রতি পিস খাইট্টা বিক্রি হচ্ছে তিন শ টাকা থেকে এক হাজার টাকায়। আকার যত বড়, দামও তত বেশি। আবার গাছের ধরনভেদেও দামে পার্থক্য হয়। যেমন তেঁতুলগাছের কাঠের দাম তুলনামূলক বেশি।
কারওয়ান বাজারে মৌসুমি খাইট্টা বিক্রেতা মো. শাকিল জানান, তিনি মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় স মিল থেকে গাছের গুঁড়ি কাটিয়ে ‘খাইট্টা’ বানিয়ে এনেছেন। এ বছর তিনি ১৬০ পিস খাইট্টা বিক্রির জন্য এনেছেন। প্রতিটির দাম রাখছেন ৩০০-৮০০ টাকার মধ্যে। মো. শাকিল বলেন, এ বছর বাজারে খাইট্টার সরবরাহ বেশি। এ জন্য দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম।
খাইট্টার পাশাপাশি হোগলার কদরও অনেক। কারওয়ান বাজারে আজ ছয় হাত চওড়া ও সাত হাত লম্বা প্রতি পিস হোগলা বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। পাইকারিতে এসব হোগলা ১৮০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হয়। হোগলার দাম গত বছরের কাছাকাছি আছে বলেই জানান বিক্রেতারা।
এ ছাড়া ঢাকার বাজারে পশুর খাবার হিসেবে শুকনা ও কাঁচা ঘাসও বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি শুকনা ঘাস ২০ টাকা ও কাঁচা ঘাস ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর কোরবানি উপলক্ষে বিক্রির জন্য ময়মনসিংহ থেকে ছয় হাজার আঁটি ঘাস এনেছেন ব্যবসায়ী মফিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত দুই দিনে আড়াই হাজার আঁটি বিক্রি হয়েছে, বাকিগুলোও আগামীকালের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা তাঁর।