তৈরি পোশাকশ্রমিকদের জন্য ১৫ শতাংশ বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্টের দাবি করেছেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (গার্মেন্ট টিইউসি) নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে তাঁরা বাজার দর অনুসারে মজুরি পুনর্নির্ধারণ, কারখানাভিত্তিক রেশন ব্যবস্থা চালু ও ১৮ দফার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
এসব দাবি আদায়ে আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে গার্মেন্ট টিইউসি কেন্দ্রীয় কমিটি। সংগঠনের সভাপতি শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহানের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন গার্মেন্ট টিইউসির উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান, সহসভাপতি জলি তালুকদার, জিয়াউল কবীর, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন প্রমুখ।
তৈরি পোশাকশিল্পের নিম্নতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি ৫ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ শতাংশের দাবি শ্রম মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির কাছে উপস্থাপন করেছে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা। তার বিপরীতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা অতিরিক্ত ১ শতাংশ (মোট ৬ শতাংশ) মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন। তবে মালিকদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রমিকপক্ষ। তাই মালিক ও শ্রমিকপক্ষের প্রস্তাব নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি কাজ করছে।
সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা সাদেকুর রহমান বলেন, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা বার্ষিক অতিরিক্ত ১ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছেন। এটিকে কেন্দ্র করে কোনো অঘটন ঘটলে তার দায়দায়িত্ব মালিকপক্ষকে নিতে হবে।
সমাবেশে গার্মেন্ট টিইউসির উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবি করে গত বছরের অক্টোবরে পতিত স্বৈরাচারের গুলিতে চারজন পোশাকশ্রমিক প্রাণ হারান। বাজারদরের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হারে মজুরি বৃদ্ধি করা না হলে সেটা গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে।
সংগঠনের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, শ্রমিকেরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিকে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপে শ্রমিকদের প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখতে চাই। তিনি আরও বলেন, সরকার তাদের পছন্দের লোকদের দিয়ে মজুরি বৃদ্ধি ও শ্রম সংস্কারবিষয়ক দুটি পৃথক কমিটি করেছে। আমরা আশা করি, শ্রমিকদের সঙ্গে অতীতের ন্যায় কোনো প্রহসন সংঘটিত হবে না।
সহসভাপতি জলি তালুকদার বলেন, শ্রমিকের দাবির মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোঁজা পুরোনো স্বৈরাচারী অপকৌশল। সরকারকে দায়িত্ববোধ থেকে শ্রমিকের সমস্যার সুরাহা করতে হবে। শ্রমিকেরাও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সব দেশবিরোধী ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্রান্ত মোকাবিলা করবে।