রাজধানী ঢাকার শ্যামপুরে উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির জমিতে অস্থায়ীভাবে নির্মিত রাসায়নিক গুদামের উদ্বোধন করা হয়েছে। চকবাজারে চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের সব গুদাম সরিয়ে নিতে শ্যামপুরে এই অস্থায়ী গুদাম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
আজ রোববার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস অস্থায়ী এই গুদামের উদ্বোধন করেন। এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিআইসি চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান এবং প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মাকসুস উপস্থিত ছিলেন।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার আগুনে পুড়ে ৭১ জনের মৃত্যু হয়। এরপর পুরান ঢাকা থেকে সব রাসায়নিক গুদাম অস্থায়ী ভিত্তিতে সরিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরোনো সড়কের শ্যামপুরে অবস্থিত উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির জমিতে নতুন করে গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বরে ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড নামের বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুদামটি নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা সংকটসহ নানা কারণে নির্মাণকাজে বিলম্ব হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে সব কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
অস্থায়ী গুদাম উদ্বোধনের পর আজ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, নিমতলী ও চুড়িহাট্টার মতো দুর্ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে রাসায়নিক গুদামগুলো সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। এর অংশ হিসেবে এই অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। শিগগিরই এটি প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিকট বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিল্পমন্ত্রী আরও জানান, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ৩১০ একর জায়গায় বিসিক রাসায়নিক শিল্পপার্ক প্রকল্পের কাজ চলছে। সেখানে প্লট বরাদ্দ প্রক্রিয়া চলমান।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘এখন পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক ও বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামগুলো এখানে স্থানান্তর হতে পারবে। আশা করব, এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার জন্য দ্রুত একটি ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে এ নীতিমালা করতে যেন আবার কয়েক বছর লেগে না যায়।’
শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৯ সালের মার্চে। প্রায় ৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই গুদামের কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অনুদান ছিল ৫৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা ও বিসিআইসি দিয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা।