ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়নি

ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাব আজ রোববার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অনুমোদিত হয়নি। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকটিতে সভাপতিত্ব করেন। এটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত (এডিপি) একটি প্রকল্প। বৈঠকে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আপাতত অর্থ বরাদ্দ নেই। তাই এটিকে পরে উপস্থাপন করতে হবে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

‘দেশের ৪৮ জেলায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি’ শীর্ষক প্রকল্প গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন হয়। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি। তিন বছর আগে ১৬ জেলার জন্য একই ধরনের আরেকটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, যার মেয়াদ ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন। এর প্রশিক্ষণও দিয়েছে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড।

নতুন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করার দরপত্রে ২০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তবে গ্রহণযোগ্য (রেসপনসিভ) হয় ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড, বাংলাদেশ আইটি ইনস্টিটিউট, এসইও এক্সপেইট বাংলাদেশ লিমিটেড ও নিউ হরাইজনস সিএলসি অব বাংলাদেশ। কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন যোগ করে প্রথম হিসেবে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড নামক কোম্পানিকে ঠিক করা হয়।

নথিপত্র অনুযায়ী, এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ পাওয়ার কথা ছিল ২৮ হাজার ৮০০ যুবক ও যুব নারী। শিক্ষিত বেকারদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা এবং বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করাই হচ্ছে এর উদ্দেশ্য। প্রশিক্ষণ নিতে কোনো টাকা লাগবে না; বরং ৫০০ টাকা করে দৈনিক ভাতা পাওয়ার কথা তাঁদের।

ক্রয় কমিটিতে প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় উপস্থাপিত সার-সংক্ষেপে বলা হয়, ‘যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রস্তাবটি দেখেছেন, অনুমোদন করেছেন এবং ক্রয় কমিটিতে উত্থাপনের সম্মতি দিয়েছেন।’

জানা গেছে, সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রশিক্ষণ দিতে প্রতিটি জেলায় ২৫টি কম্পিউটার ও হাইস্পিড ইন্টারনেট-সংবলিত দুটি ল্যাব স্থাপন করা হবে। প্রতিটি ল্যাবে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন ২৫ জন করে প্রশিক্ষণার্থী। একেক ব্যাচে ৫০ জন ভর্তি হতে পারবেন। তবে আবেদন করতে হবে অনলাইনে। প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক পাস এবং তাঁদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। চূড়ান্ত করতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। তিন মাসের প্রশিক্ষণকালে দৈনিক ভাতা মূলত ২০০ টাকা। তবে খাবারের জন্য প্রত্যেককে আরও ৩০০ টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রস্তাবটি পরে আবার কবে ক্রয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে, এমন প্রশ্ন করা হলে যুব ও ক্রীড়াসচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সরকার যদি প্রকল্পটির বাস্তবায়ন চায়, তাহলে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের হাতেই প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া উচিত হবে। কবে এটি নতুন করে ক্রয় কমিটিতে তোলা হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।