মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার। সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে (বিবিসিএফইসি) এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের মেলায় দেশ-বিদেশের ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন থাকবে।
গত বছরের চেয়ে এ বছর মেলায় স্টলের সংখ্যা ১২৬টি বেড়েছে। মেলায় সিঙ্গাপুর, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১০ দেশের ১৭টি স্টল থাকবে। মেলা প্রাঙ্গণে বর্তমানে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ। এবার মেলায় প্রবেশ ফি ধরা হয়েছে গত বছরের মতো, বড়দের জন্য ৪০ টাকা আর শিশুদের ২০ টাকা।
বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে আজ শনিবার বিবিসিএফইসিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে মেলার আয়োজক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান ও মো. আবদুর রহিম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে দেশি পণ্য বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেলা থেকে আয় করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয়, বরং আমাদের বিশ্বমানের দেশি পণ্য সবার কাছে তুলে ধরাই মূল লক্ষ্য।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সময় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় ছিল না। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ভালো অবস্থানে রয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ রয়েছে। তাই আশা করছি, অর্থবছর শেষে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।’
প্রতিবছর রপ্তানি আয় বাড়ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই আয় আরও বাড়াতে হবে। মাঝখানে করোনার জন্য অনেক সমস্যা হয়েছে। সে সময়ও ৫৮ বিলিয়নের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছিলাম। বর্তমানেও বৈশ্বিক ঝামেলা যাচ্ছে। এ নিয়ে সারা পৃথিবীতেই একটা অস্থির অবস্থা চলছে। তার মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ভালো আছে। আমরা ভয় পাচ্ছিলাম যে আমাদের ওপর বড় ধরনের চাপ পরে কি না, সেটা হয়নি। গত বছর বাণিজ্য মেলা থেকে ২০০ কোটি টাকার স্পট অর্ডার এসেছিল। আনুমানিক ৮০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে।’ বাণিজ্যমন্ত্রীর আশা, এ বছর এর পরিমাণ আরও বাড়বে।
এ বছর মেলার প্রবেশপথ বা গেটের ইজারা পেয়েছে স্থানীয় রূপগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ভূঁইয়ার প্রতিষ্ঠান আবদুল্লাহ অ্যান্ড সন্স। ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকায় গেটের ইজারা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থেকে সরিয়ে গত বছর প্রথমবারের মতো পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে ইপিবি। সে সময় ৩০০ ফুট সড়কের নির্মাণকাজ চলতে থাকায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এবার সে ধরনের ভোগান্তি যেন না হয়, সে জন্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে সাধারণ দিনে ৫০টি ও ছুটির দিনে দেড় শতাধিক বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করেছেন আয়োজকেরা।