গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন ধরনের নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম কমানোর উদ্যোগ নেয় দেশের প্রথম সারির ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান স্কয়ার টয়লেট্রিজ।
বিশ্ববাজারে নিত্যব্যবহার্য পণ্যের কাঁচামালের দাম কমার সুফল পাচ্ছেন এ দেশের ভোক্তারাও। কারণ, কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ায় সাবান, গ্লিসারিন, গুঁড়া সাবান বা ডিটারজেন্ট পাউডার, স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যের দাম কমিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এফএমসিজি (ফাস্ট মুভিং কনজ্যুমার গুডস) কোম্পানি স্কয়ার টয়লেট্রিজ।
এমন এক সময়ে স্কয়ার টয়লেট্রিজ তাদের বিভিন্ন ধরনের নিত্যব্যবহার্য সামগ্রীর দাম কমিয়েছে, যখন বাজারে ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে কমবেশি সব ধরনের পণ্যের দামই ঊর্ধ্বমুখী। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে হিমশিম খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নমধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষ। স্কয়ার টয়লেট্রিজ বলছে, তাদের সাবান, গ্লিসারিন, কাপড় ধোয়ার গুঁড়া সাবানসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম কমানোর সিদ্ধান্তের ফলে ক্রেতারা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।
কোম্পানিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পণ্যভেদে তাঁরা সর্বনিম্ন ২ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমিয়েছেন। সব মিলিয়ে বিভিন্ন ওজন বা পরিমাপের ২৫ ধরনের প্যাকের দাম কমিয়েছেন তাঁরা। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে এ দাম কমানো হয়। যার সুফল এখন পাচ্ছেন ভোক্তারা।
বিশ্ববাজারে কিছু কিছু কাঁচামালের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও বেশ কিছু পণ্যের দাম কমিয়েছি। কাঁচামালের দাম কমার ফলে আর্থিকভাবে যতটা সাশ্রয় আমাদের হয়েছে, দাম কমিয়ে তার পুরোটা সুফলই আমরা ভোক্তাকে দিয়েছিমালিক মোহাম্মদ সাঈদ, সিওও, স্কয়ার টয়লেট্রিজ
এ বিষয়ে স্কয়ার টয়লেট্রিজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মালিক মোহাম্মদ সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নকে আমরা আমাদের একটি দায়িত্ব বলে মনে করি। শুধু পণ্য উৎপাদন আর বিপণন নয়, ব্যবসার বাইরেও প্রত্যেক গ্রাহকের সঙ্গে আমাদের বহু বছরের একটি বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আর তাই বিশ্ববাজারে কিছু কিছু কাঁচামালের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও বেশ কিছু পণ্যের দাম কমিয়েছি। কাঁচামালের দাম কমার ফলে আর্থিকভাবে যতটা সাশ্রয় আমাদের হয়েছে, দাম কমিয়ে তার পুরোটা সুফলই আমরা ভোক্তাকে দিয়েছি। ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো পণ্যের দাম যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি কমানো হয়েছে। এতে মানুষের জীবন কিছুটা হলেও সহজ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
স্কয়ার টয়লেট্রিজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেরিল মিল্ক সোপ বারের ১৫০ গ্রামের প্যাকেটের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ৭০ টাকা, ১০০ গ্রামের প্যাকেটের দাম ৫ টাকা কমিয়ে ৫৫ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭৫ গ্রামের প্যাকেও রয়েছে বিশেষ মূল্যছাড়। সাবান ছাড়া দাম কমানো হয়েছে গুঁড়া সাবান বা ওয়াশিং পাউডারেরও। চাকা সুপার হোয়াইটের এক হাজার গ্রামের প্যাকের দাম ২০ টাকা কমিয়ে ১৮০ টাকা, চাকা অ্যাডভান্সড ওয়াশিং পাউডারের এক হাজার গ্রামের প্যাকেটের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ১৩৫ টাকা ও ২০০ গ্রামের প্যাকেটের দাম ২ টাকা কমিয়ে ২৮ টাকা করা হয়েছে। মেরিল গ্লিসারিনের ১২০ গ্রামের প্যাকেটের দাম ২৫ টাকা কমিয়ে ১১৫ টাকা ও ৬০ গ্রামের প্যাকেটের দাম ১৫ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা করা হয়েছে।
এর বাইরে স্কয়ারের জনপ্রিয় সেনোরা ব্র্যান্ডের স্যানিটারি ন্যাপকিন বেল্টের ১০টি প্যাডের প্যাকেটের দাম ২০ টাকা কমে এখন পাওয়া যাচ্ছে ৮০ টাকায়। আর সেপনিল হ্যান্ডওয়াশের ২০০ মিলিলিটারের প্যাকের দাম কমানো হয়েছে ১০ টাকা।
স্কয়ার টয়লেট্রিজ যেসব পণ্যের দাম কমিয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম কমানো হয়েছে মেরিল গ্লিসারিনের। বাজারে মেরিল গ্লিসারিনের দুই ধরনের প্যাক পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১২০ গ্রাম প্যাকের দাম সর্বোচ্চ ২৫ টাকা কমানো হয়েছে। আর ৬০ গ্রামের প্যাকে কমানো হয়েছে ১৫ টাকা।
কোম্পানি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকে বিশ্ববাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে দেশে হু হু করে বাড়তে থাকে ডলারের দামও। তাতে নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী তৈরির কাঁচামালের দাম, পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। তাতে বেড়ে যায় উৎপাদন খরচও। এ কারণে গত বছর কয়েক ধাপে সাবান, গুঁড়া সাবান, স্যানিটারি ন্যাপকিনসহ নিত্যব্যবহার্য সামগ্রীর দাম বাড়ানো হয়। এখন বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম কমে আসায় এসব পণ্যের দামও সমন্বয় করা হচ্ছে। স্কয়ার টয়লেট্রিজের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যদি ভবিষ্যতে উৎপাদন খরচ আরও কমে আসে, তাহলে তার সুফল যাতে ভোক্তারা পান, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।