তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, পোশাকের ক্রয়াদেশের ঋণপত্র থেকে নিষেধাজ্ঞায় পড়া দেশ থেকে পোশাক না নেওয়া সংক্রান্ত নতুন একটি শর্ত বা ধারা বাদ দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। ধারাটি বাদ দিয়ে প্রয়োজন হলে নতুন ঋণপত্র ইস্যু করবে ক্রেতা কোম্পানি।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান আজ বৃহস্পতিবার রাতে নতুন এক ব্যাখ্যায় এসব তথ্য জানান। এতে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কারিবান গত ৮ নভেম্বর সোর্সিং প্রতিষ্ঠান জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনালকে ৭ লাখ ৫৭ হাজার মার্কিন ডলারের একটি মাস্টার এলসি বা মূল ঋণপত্র দেয়। সেটির বিপরীতে জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনাল ২ লাখ ২৮ হাজার ডলারের ঋণপত্র নারায়ণগঞ্জের নিট কনসার্ন লিমিটেডকে স্থানান্তর করে। দুবাইয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ইস্যু করা সেই মূল ঋণপত্রে উল্লেখ ছিল, ‘আমরা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্য কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত কোনো দেশ, অঞ্চল বা দলের সঙ্গে লেনদেন প্রক্রিয়া করব না। নিষেধাজ্ঞার কারণগুলোর জন্য আমরা কোনো বিলম্ব, নন-পারফরম্যান্স বা তথ্য প্রকাশের জন্য দায়ী নই।’
বিজিএমইএ জানায়, কারিবান ও জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনাল আজ ঋণপত্রের নতুন ধারাটির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছে। এতে বিদেশি দুই প্রতিষ্ঠান বলেছে, জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনালকে দেওয়া মাস্টার এলসিতে তারা নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত কোনো ধারা যুক্ত করেনি। এটি দুবাইয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক যুক্ত করেছে, যা ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে প্রতিটি ঋণপত্রের ক্ষেত্রেই তারা করছে। এই ধারায় বলা নেই যে বাংলাদেশ কোনো নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে।
এসব তথ্য দিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, সুতরাং ঋণপত্রের নতুন ধারার কারণে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে, এমন গুজব ভিত্তিহীন। তিনি আরও বলেন, ঋণপত্র ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক উপকরণ, সংবিধিবদ্ধ আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি নয়। তাই এটিকে বাণিজ্যে প্রয়োগ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কোনো পরিমাপ হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করা উচিত নয়। বিজিএমইএ কূটনৈতিক মিশন বা সরকারি উত্স থেকে নিষেধাজ্ঞা বা বাণিজ্যে বিধিনিষেধের বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি।
ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া শর্তের বিষয়টি গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের একটি বৈঠকে সামনে আসে। সেখানে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ঋণপত্রের শর্তের কথাটি বলেন।
বিষয়টি কী, তা জানতে চাইলে ফারুক হাসান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ কোনো নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লে পণ্য না নেওয়া কিংবা অর্থ পরিশোধ না করার নতুন শর্ত যুক্ত করে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশের ঋণপত্র (এলসি) দিয়েছে একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি। উদ্যোক্তারা নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়বেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই উদ্যোক্তারা দুশ্চিন্তায় পড়বেন। যদিও আমরা মনে করি না, ব্যবসায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
ফারুক হাসান আজ রাতে আরেক বার্তায় জানিয়েছেন যে ব্যাংকের পক্ষ থেকে এলসিতে উল্লেখ করা শর্ত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।