বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ
বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ

জ্বালানিসংকটের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে: ঢাকা চেম্বার

জ্বালানি স্বল্পতার কারণে শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ। গতকাল শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে সমসাময়িক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই সভাপতি সমসাময়িক অর্থনীতিবিষয়ক ১২টি বিষয়ের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন। পাশাপাশি ২০২৪ সালে ডিসিসিআইয়ের কর্মপরিকল্পনাও উপস্থাপন করেন। এ সময় ঢাকা চেম্বারের নতুন ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘জ্বালানি–স্বল্পতার বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে আমরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমস্যাটি সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি বর্তমানে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, খেলাপি ঋণ, পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীলতা, ব্যালান্স অব পেমেন্ট ও টাকার অবমূল্যায়নের সমস্যায় রয়েছে। তবে বাংলাদেশের এ ধরনের সমস্যা সফলতার সঙ্গেই মোকাবিলার পূর্ব–অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে আশা করছি, আগের অভিজ্ঞতার আলোকে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও প্রবৃদ্ধি সহায়ক নীতি প্রণয়নের ওপর জোর দেন ডিসিসিআই সভাপতি। সম্প্রতি ঘোষিত মুদ্রানীতি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে আরও গতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন আশরাফ আহমেদ। তিনি বলেন, মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ বৃদ্ধি ও ব্যালান্স অব পেমেন্টের স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হবে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি জরুরি উল্লেখ করে আশরাফ আহমেদ বলেন, দেশের আমদানি–বিকল্প শিল্পের উন্নয়নে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার সুবিধা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কার্যক্রমও বাড়ানো প্রয়োজন।

পুঁজিবাজারে লেনদেন অবকাঠামো (ট্রেডিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার) ও অংশগ্রহণ বাড়াতে অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডের (এটিবি) ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেন আশরাফ আহমেদ। ট্যাক্স কোড ব্যবহারের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টিং ও রিপোর্টিং প্রক্রিয়ায় সমন্বয় বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

এ ছাড়া দেশের কৃষি, ওষুধ, ইলেকট্রনিকস, হালকা প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি ও তৈরি পোশাক খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য খাতভিত্তিক একটি সুনির্দিষ্ট দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় বিনিয়োগ কর্মকৌশল প্রণয়ন করা জরুরি বলে জানান ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ।