বাজারে ছোট খামারিদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানো ও উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। এসব দাবি না মানলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
গত রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন ঘোষণার কথা জানিয়েছে প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বিজ্ঞপ্তিতে বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার জানান, প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের স্বার্থ রক্ষা ও করপোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট বন্ধের দাবিতে তাঁরা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক পোলট্রি খাতের সমস্যা ও সংকট সমাধানের জন্য বারবার আহ্বান জানানোর পরও সরকার সেদিকে নজর দিচ্ছে না। উল্টো করপোরেট সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করছে। এতে পোলট্রি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।
ডিম–মুরগির বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিপিএ। সংগঠনটি বলেছে, বর্তমানে মুরগি ও ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে প্রান্তিক খামারিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় বিপিএর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে করপোরেট কোম্পানিগুলো মুরগি খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনের পাশাপাশি ডিম-মুরগিও উৎপাদন করছে। এতে প্রান্তিক খামারিরা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না। এ কারণে করপোরেট কোম্পানিগুলোকে শুধু ফিড ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে সীমাবদ্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে বিপিএ।
প্রান্তিক খামারিদের সংগঠনটি বলছে, করপোরেট কোম্পানিগুলো মুরগির খাদ্য ও বাচ্চার দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করেছে। এতে প্রান্তিক খামারিদের মুরগি ও ডিম উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। অন্যদিকে পোলট্রি খাতের বড় কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত ডিম ও মুরগির দামও নিজেদের মতো করে নির্ধারণ করে। এই কারণে ছোট খামারিরা তাঁদের উৎপাদন খরচের সঙ্গে সংগতি রেখে পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে পারেন না এবং লোকসানের মুখে পড়েন। তাই প্রান্তিক খামারিদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বিপিএ। একই সঙ্গে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিপিএর অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান; ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের পুনরুদ্ধারে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া; ছোট খামারিদের জন্য আলাদা বাজার সুবিধা তৈরি করা; নীতিমালার মাধ্যমে করপোরেট সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা; চুক্তিভিত্তিক ফার্মিং বন্ধ করা এবং প্রান্তিক খামারিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে দেশের পোলট্রি শিল্পে স্থিতিশীলতা ফিরবে। তাতে প্রান্তিক খামারিরা বাঁচবেন। তবে সরকার যদি এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব জেলা-উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধ রাখা হবে।