চলতি বছর বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অর্থনীতির আরেকটি সূচকে পিছিয়ে পড়েছে দেশটি। অক্টোবর মাসে ভারতের শিল্পোৎপাদন সূচক (আইআইপি) ৪ শতাংশ কমেছে—২৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ, যদিও গত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সামগ্রিক আইআইপি বেড়েছে। এ সময়ে তার আইআইপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৩।
দেশটির পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, অক্টোবর মাসে ভারতের কারখানার উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। খনি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ২ দশমিক ৫ ও ১ দশমিক ২ শতাংশ। সবচেয়ে শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, সেই মাসে দেশটির ভোক্তাদের স্থায়ী পণ্য কেনার হার কমেছে ১৫ দশমিক ৩ আর মূলধনি পণ্য উৎপাদন কমেছে ২ দশমিক ৩।
দেশটির উৎপাদনমুখী ৩২টি খাতের মধ্যে ১৭টি খাতের সংকোচন হয়েছে অক্টোবর মাসে। সবচেয়ে সংকোচন হয়েছে পোশাক খাতের ৩৭ শতাংশ; এরপর বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ ও টেক্সটাইল খাতের সংকোচন হয়েছে যথাক্রমে ৩৭, ৩৩ দশমিক ২, ২৪ দশমিক ৩, ২১ দশমিক ৪ ও ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, এবার যদি ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বড় অর্থনীতিগুলোর সবচেয়ে বেশি হয়, তাহলে কেন এই সংকোচন; তাও আবার অক্টোবর মাসে। কারণ, সেই মাসেই ছিল ভারতের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি। স্বাভাবিকভাবেই তখন গাড়িসহ সবকিছুর বেচাকেনা বেড়ে যায়। এবার তার উল্টোটা ঘটল। চাহিদা ও বিনিয়োগ বাড়লেই শুধু অর্থনীতি চাঙা হবে। এতে উৎপাদন বাড়বে।
প্রতি মাসে আইআইপির পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না; কারণ, সাধারণত ছয় সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মাসের ১২ তারিখে এটি প্রকাশ করা হয়।
এদিকে নভেম্বর মাসে ভারতের খুচরা মূল্য সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ; অক্টোবর মাসে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ভোক্তা মূল্য সূচকের (সিপিআই) ওপর ভিত্তি করে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার নির্ধারণ করা হয়।
দেশটির খুচরা মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে রয়েছে। এ হার ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি রয়েছে। এদিকে খুচরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মে মাসে সুদহার ২২৫ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ করেছে।