শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য এই সভায় পোশাকশিল্পের মজুরি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ স্বাক্ষরিত এক নোটিশে আজ রোববার পোশাক খাতের মজুরি নির্ধারণের জন্য গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ষষ্ঠ সভার বিষয়ে জানানো হয়। এতে বোর্ডের সব সদস্যকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছিলেন, ‘মালিকদের ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব অযৌক্তিক। আগামী মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মজুরি বোর্ডের পরবর্তী সভা হবে।’
পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে সরকার নিম্নতম মজুর বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব দেন। তার বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা পরদিন আন্দোলনে নামেন। প্রথমে গাজীপুরে মজুরি বৃদ্ধির দাবি আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া-সাভারেও ছড়িয়ে পড়ে।
শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যেই গত সোমবার গাজীপুরে দুজন শ্রমিক নিহত হন। তার পরদিন আন্দোলন আরও সহিংস হয়ে উঠলে মালিকেরা পর্যায়ক্রমে কারখানা বন্ধ করেন। গত বৃহস্পতিবার মিরপুর ও গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। ওই দিন বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে ছয় শ পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। এর মধ্যে মিরপুরের ২৩৫টি, আশুলিয়ার ৩৫টি ও গাজীপুরের ৩৮৬টি কারখানা।
এমন পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ ঘোষণা দেয়, শ্রমিকেরা কাজ না করলে এবং ভাঙচুর হলে শনিবার (৪ নভেম্বর) থেকে ‘কাজ নেই, মজুরি নেই’ ভিত্তিতে কারখানা বন্ধ থাকবে। ওই দিন বন্ধ কারখানা চালু করা হয়। তবে আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভ হয়। গাজীপুরের দু-একটি জায়গায় আন্দোলনে নামেন শ্রমিকেরা। এতে অন্তত ২৯টি কারখানা ছুটি দিতে বাধ্য হয় মালিকপক্ষ। অবশ্য আজ রোববার সকাল থেকে শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। কারখানাগুলোও চলছে।