বিজিএমইএর লোগো
বিজিএমইএর লোগো

এবার বিজিএমইএর পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টাকে চিঠি

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পর এবার তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি উঠেছে। বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরাম সংগঠনটির পর্ষদ ভেঙে অন্তর্বর্তী পর্ষদ গঠন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে চিঠি দিয়েছে।

ফোরামের মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী গতকাল সোমবার এই চিঠি দেন। তিনি চিঠিতে দাবি করেন, বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপের কারণে অন্যান্য বাণিজ্য সংগঠনের মতো বিজিএমইএও এক দশকের বেশি সময় ধরে স্বতন্ত্র ও গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়নি। ভুয়া ভোটার ও জাল ভোট প্রদান এবং বহিরাগত দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে নির্বাচন নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।

গত মার্চের নির্বাচন নিয়ে ফোরামের মহাসচিব চিঠিতে বলেন, বিজিএমইএর নির্বাচনসংক্রান্ত নিয়মাবলি অনুসারে, ভোটারদের হালনাগাদ আয়কর রিটার্ন ও ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এই নিয়ম ভঙ্গ করে অনেককে ভোটার করা হয়েছে, যাঁদের ট্রেড লাইসেন্স ভুয়া ও আয়কর রিটার্ন হালনাগাদ ছিল না। কারখানার অস্তিত্ব নেই কিংবা দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ ও রপ্তানি নেই, এমন ব্যক্তিদের ভোটার করা হয়েছে। নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর অনেক সদস্যকে ভোটার করা হয়েছে, যাঁদের কারখানা বন্ধ, অস্তিত্বহীন ও হালনাগাদ কাগজপত্র ছিল না, এমনকি ওই সংগঠনে তাঁদের ভোটাধিকারও নেই। এ ধরনের ভুয়া ভোটাররাই সম্মিলিত পরিষদের ভোট ব্যাংক হয়ে ওঠেন। এভাবেই একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর (উত্তর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান সভাপতি পদে বসেন।

চিঠিতে ফোরাম আরও বলেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান সংগঠনের কার্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছেন না। এমন অনুপস্থিতি বিদায়ী সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বা জড়িত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ দেয়। এমনকি এস এম মান্নানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২–এর ধারা ১৭ অনুযায়ী বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান ফোরামের মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী। একই সঙ্গে সংগঠনের ভেতরের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলেন তিনি।

সংগঠনটির সাধারণ সদস্যদের একাংশ গত সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন করে বিজিএমইএর সভাপতি ও পরিচালকদের পদত্যাগ দাবি করে। একই সঙ্গে দলীয় প্রভাবমুক্ত অন্তর্বর্তী পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চান তাঁরা। সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে ফোরামের নেতা-কর্মীরাই মূলত ওই সংবাদ সম্মেলন করেন।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ৭ আগস্ট ফোরামের নেতা-কর্মীরা বিজিএমইএর কার্যালয়ে গিয়ে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ওপর অনাস্থা জানিয়ে স্মারকলিপি দেন। ওই দিনই কমিটি ভেঙে দিতে পর্ষদকে চাপ দেন তাঁরা। এ বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনায় বেশ হট্টগোলও হয়। ওই দিন রাতে বিজিএমইএর পর্ষদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলে, সংগঠনের কার্যালয়ে ফোরাম সদস্যরা যেভাবে হট্টগোল করে পর্ষদের নেতৃত্ব অধিগ্রহণের চেষ্টা করেছেন, তাতে দেশের বৃহত্তম রপ্তানি খাতের ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণ্ন হয়েছে।