অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, আগামীকাল দেশের সব তৈরি পোশাকশিল্প কারখানা খোলা থাকবে। কোনো কারখানায় অস্থিরতা তৈরি হলে বিশেষ ব্যবস্থা নেবে সরকার। দেশের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে কেউ যদি কারখানা বন্ধ রাখার অপচেষ্টা করেন, সেটাও মনে রাখা হবে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবনে এক মতবিনিময় সভায় শিল্প উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তৈরি পোশাক কারখানায় চলমান সংকট ও উত্তরণের পথ নিয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বিজিএমইএ। উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রমুখ।
বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন। বলেন, সরকার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ায় আগামীকাল সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে। তবে কোনো কারখানায় অস্থিরতা তৈরি হলে আগামী পরশু দিন থেকে সেই কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা (কাজ নেই, বেতন নেই) অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
মতবিনিময় সভায় তৈরি পোশাকমালিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ও সরকারের তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
আদিলুর রহমান খান বলেন, তৈরি পোশাক খাতে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে সরকার কমিটি করেছে। এই কমিটির মাধ্যমে সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার যে সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, তা ফিরিয়ে আনতে হবে।
শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হওয়ায় অনেকের মতো শ্রমিকেরাও নিজেদের কথা বলছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ সমাধানে শ্রমসংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সব অভিযোগ ও দাবি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তবে শ্রমিকের আন্দোলনে একদমই যে ষড়যন্ত্র নেই, এমনও নয়।
শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, ইতিমধ্যে শ্রমিকদের জন্য কোন প্রক্রিয়ায় রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যায়, সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। এ ছাড়া গত বছরের শেষ দিকে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের সময় যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শ্রম আইনের মধ্য থেকে ট্রেড ইউনিয়ন করার যতটা সুযোগ আছে, তা নিশ্চিত করবে সরকার।
তবে এই সব প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে যারা অস্থিরতা করবে, তাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না।