বাণিজ্যমেলায় পাইলট কাস্টম ৮২৩ ফাউন্টেন পেন নামের এই কলমটির নিবে রয়েছে ১৪ ক্যারেটের সোনার প্রলেপ। ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি)
বাণিজ্যমেলায় পাইলট কাস্টম ৮২৩ ফাউন্টেন পেন নামের এই কলমটির নিবে রয়েছে ১৪ ক্যারেটের সোনার প্রলেপ। ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি)

নিবে সোনার প্রলেপ দেওয়া ২৬ হাজার টাকার কলম বাণিজ্যমেলায়

প্রতিদিনের কাজের প্রয়োজনে আপনি বা আমি যেসব কলম ব্যবহার করি তার দাম কত, বড়জোর ৫ থেকে ৫০ টাকা। যদিও একটু ভালোমানের ফাউন্টেন কলম কিনতে যায় দাম হয়তো আরেকটু বেশি, হয়তো হাজার টাকা। তবে কেউ শখের দামি কলম কিনতে চাইলে সে কথা ভিন্ন।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক পেন শপ ডটকম নামের একটি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত বিশ্বে সর্বোচ্চ দামে যে কলমটি নিলামে বিক্রি হয়েছে সেটির দাম ৫৯ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭৭ কোটি টাকা ( প্রতি পাউন্ডের দাম ১৩০ টাকা ধরে)। বিরল জাতের কালো হিরার ওই কলমটি তৈরি করেছিল কলমের বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড টিবালদি।

হিরার তৈরির বিশ্বের দামি সেই কলমের কথা না হয় বাদই দিলাম। দেশের বাজারে একটি কলমের দাম যদি হয় ২৬ হাজার টাকা, তাহলে বিষয়টিকে কীভাবে দেখবেন। হ্যাঁ, দেশে ২৬ হাজার টাকায় একটি কলম বিক্রির জন্য বাণিজ্য মেলায় তোলা হয়েছে। আর এ দামের কারণে এরই মধ্যে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে কলমটি।

পাইলট কাস্টম ৮২৩ ফাউন্টেন পেন (কলম) নামের এই কলমটি পাওয়া যাচ্ছে বাণিজ্য মেলায় পাইলট ব্র্যান্ডের স্টলে। জাপানি কলম প্রস্তুতকারক কোম্পানি পাইলট করপোরেশন এই কলম তৈরি করেছে। দেশে পাইলট কলমের একমাত্র পরিবেশক কিউ অ্যান্ড কিউ ট্রেডিং লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি।

গত ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) চলছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বা ইপিবি এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে।

দুই বন্ধু মুশফিক আমিন ও মৌরীন হায়দার কিউ অ্যান্ড কিউর স্টলে পাইলটের কলম দেখছেন। গত মঙ্গলবার পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত বাণিজ্যমেলায়

বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় কিউ অ্যান্ড কিউ ট্রেডিংয়ের জ্যেষ্ঠ ব্র্যান্ড নির্বাহী মারজুক আল হকের সঙ্গে। তিনি জানান, সাধারণত ক্যালিগ্রাফি, কারসিভ ধরনের লেখা, স্বাক্ষর করা, সনদপত্র লেখা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার হয় ২৬ হাজার টাকা দামের এ কলমটি।  

মারজুক আল হক জানান, ৩০ গ্রাম ওজনের কলমটির নিবে রয়েছে ১৪ ক্যারেট মানের সোনার প্রলেপ। এ ছাড়া কলমটির সঙ্গে থাকছে একটি কালির বাক্স। যেটাতে ৭০ মিলিলিটার কালি রয়েছে। কাস্টম ৮২৩ মডেলের দুই রঙের ফাউন্টেন কলম মেলায় আনা হয়েছে। এর একটি কালো ও অন্যটি কফি রঙের।

পাইলটের স্টলে দামের দিক থেকে এর পরে রয়েছে ক্যাপ লেস ফাউন্টেন কলম। এ ধরনের কলমের একেকটির দাম সাড়ে ১০ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা। এই মডেলের কলমের নিবেও ব্যবহার করা হয়েছে ১৮ ক্যারেটের সোনার প্রলেপ। এ ধরনের কলম রয়েছে ১০ রঙের।

এ ছাড়া মেট্রোপলিটন ফাউন্টেন পেনও বেশ জনপ্রিয় বলে জানান মারজুক আল হক। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ও তরুণ বয়সীরা নিজস্ব লেখালেখির কাজে ব্যবহার ও উপহারের জন্য এই ধরনের কলম বেশি কেনেন। এ ধরনের একেকটি কলমের দাম ২ হাজার ২০০ টাকা। তবে সাধারণ লেখালেখির জন্য পাইলটের ভি-সিরিজের কলমগুলো সব বয়সীদের কাছে বেশ সমাদৃত বলে জানান মারজুক। ১১০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত এসব কলমের দাম।

পাইলটের স্টল থেকে গত মঙ্গলবার ভি-সিরিজের বেশ কয়েকটি কলম কিনেছেন মিরপুরের হারুন মোল্লা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ফাহিম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সাধারণ বলপেনের পাশাপাশি কিছুটা উন্নত ধরনের কলম দিয়ে লিখতে আমার ভালো লাগে। এ জন্য নিজের ও ভাইয়ের জন্য প্রায় ৫ হাজার টাকায় ২৬টি কলম কিনেছি। এর মধ্যে কয়েকটি আছে ভি সিরিজের। বাকিগুলো অন্য মডেলের।

এদিকে তীব্র শীতের কারণে এবারের বাণিজ্য মেলার শুরুর কয়েক দিনে গ্রাহক উপস্থিতি কম থাকলেও গত শুক্র ও শনিবার সেই খরা কিছুটা কেটেছে। বিক্রেতারাও সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতেই সবচেয়ে বেশি বিক্রির আশায় আছেন। এ ছাড়া গ্রাহক টানতে দিচ্ছেন বিশেষ মূল্যছাড়।