শ্রমিক সমাবেশ

পোশাকশিল্পে নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি 

বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে মজুরি বৃদ্ধিসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়।

পোশাকশ্রমিকদের নিম্নতম ২৫ হাজার টাকা মজুরিসহ ৭ দফা দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতা-কর্মীরা। গতকাল রাজধানীর শাহবাগে।
সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়, সে কারণে পোশাক রপ্তানিতে বড় পতন হয়নি। কিন্তু দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এখন লাগামছাড়া। গত পাঁচ বছরে কোনো কোনো খাদ্যপণ্যের দাম শতভাগের বেশি বেড়েছে। জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামও দফায় দফায় বেড়েছে। বর্তমান বাজারে শ্রমিককে দারিদ্র্যসীমার ওপরে থেকে বাঁচতে হলে ২৫ হাজার টাকার নিচে মজুরি নির্ধারণের কোনো সুযোগ নেই।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সমাবেশ থেকে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা এবং নতুন মজুরি ঘোষণার আগে পর্যন্ত ৬০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতাসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়।

অন্য দাবিগুলো হচ্ছে মজুরি কাঠামোতে গ্রেডসংখ্যা ৭টি থেকে কমিয়ে ৫টিতে নামিয়ে আনা, ইপিজেড ও তার বাইরের কারখানার শ্রমিকদের প্রতিবছর মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদান ও ভবিষ্য তহবিল চালু, স্থায়ীভাবে রেশনিং চালু করা, শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কমিয়ে সরবরাহ নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সংগঠক সোহেলা রুমী, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির রানা প্লাজা শাখার সংগঠক রুপালি আক্তার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবি এলেই মালিকপক্ষ অভাব-অনটনের কথা বলে। অথচ মালিকের সামর্থ্য নেই কিংবা ক্রয়াদেশ কম, এসব অজুহাতের পাল্টা তথ্য সরকারি সংস্থাই দিচ্ছে। বিদায়ী অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশ। নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩১ শতাংশ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত সুনাম কুড়ালেও ‘সস্তা’ শ্রমিকের পরিচয় ঘোচাতে পারেনি। শ্রমিকেরা পারেননি দারিদ্র্যসীমা অতিক্রম করতে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, চার সদস্যের একটি পরিবারের বেঁচে থাকতে মাসে ৪৪ থেকে ৪৭ হাজার টাকার প্রয়োজন। অথচ শ্রমিকেরা মাত্র ২৫ হাজার টাকা দাবি করেছেন।

শ্রম মন্ত্রণালয় গত এপ্রিলে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে। সেই বোর্ড গত তিন মাসে একটি সভা করেছে। সময়ক্ষেপণ না করে নতুন মজুরি কাঠামো চূড়ান্ত করার দাবি জানান বক্তারা।