উৎপাদন মজুরি বাড়ানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছে নিটিং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, ডলারের বিনিময়মূল্য বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় মজুরি পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অনেক নিটিং শিল্পকারখানা এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তাই গতকাল সোমবার সকাল থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কর্মবিরতি শুরু করেছে তারা।
কর্মবিরতির কারণে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটী বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত সাড়ে চার শতাধিক নিটিং ও কলার তৈরির কারখানার উৎপাদন বন্ধ ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানে অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। এই শ্রমিক-কর্মচারীরা এখন অলস সময় পার করছেন।
নিটিং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সবকিছু আমদানিনির্ভর উল্লেখ করে বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানিনির্ভর কাঁচামালের দাম, কারখানাভাড়া, শ্রমিকদের মজুরি, নিটিং মেশিনের অ্যাকসেসরিজের দাম, পরিবহন খরচ ও দফায় দফায় বিদ্যুতের বিল বেড়েছে। এতে কারখানার উৎপাদন খরচ অনেকে বেড়ে গেছে। কিন্তু নিটিং প্রতিষ্ঠানের মজুরি সেভাবে বাড়েনি। এ কারণে আমাদের পক্ষে কারখানা সচল রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আমরা কর্মবিরতি শুরু করেছি।’
এর আগে গত ১ জুন নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছিলেন, ১ কেজি সিঙ্গেল জার্সি কাপড় নিটিং (সুতা থেকে বুনন) করে তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ১৯ টাকা। এ জন্য নিটিং–মালিকদের মজুরি দেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। ওই সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নানা সংকটে দেশের ৩০ শতাংশ নিটিং কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তাঁরা সুতা থেকে কাপড় বুননে মজুরি ২০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানান পোশাক কারখানার মালিকদের প্রতি। কিন্তু এক মাস পার হয়ে গেলেও সেই মালিকেরা তাঁদের দাবি পূরণ না করায় সংগঠনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করে।