জামদানি তাঁতশিল্পীদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রিতে সহায়তা দিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী জামদানি মেলা।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী আর্ট গ্যালারিতে এ মেলা চলবে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত।
আজ রোববার সকালে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জামদানি মেলা ২০২৪–এর উদ্বোধন করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক।
বিসিক জানায়, এবারের জামদানি মেলায় মোট ৩০টি স্টলে ৩০ জন উদ্যোক্তা পণ্য প্রদর্শন করছেন। তাঁরা সবাই নারায়ণগঞ্জ জেলার জামদানি শিল্পী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, জামদানিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত করা হবে। সে জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলার একসময়ের ঐতিহ্য মসলিনের বিকল্প হিসেবে জামদানিকে সারা বিশ্বে সমাদৃত করার সময় এসেছে বলে জানান জাকিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, উন্নত বুনন কৌশল, বাহারি নকশা ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে জামদানি অতুলনীয়। বিদেশিদের নিকটও এটি অত্যন্ত পছন্দনীয়। একসময় বাংলার মসলিন বিশ্ববিখ্যাত ছিল। এখন সময় এসেছে মসলিনের বিকল্প হিসেবে জামদানিকে সারা বিশ্বে সমাদৃত করার।
শিল্পসচিব আরও বলেন, নবীন কারিগরেরা জামদানির নকশা বিষয়ে তেমন অভিজ্ঞ নন। এ জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মানের মোড়কজাতকরণ, রপ্তানি বাণিজ্যে প্রণোদনা দেওয়া ও বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে এসব পণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সংস্কৃতিসচিব খলিল আহমদ জানান, ইউনেসকো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় আরও বেশিসংখ্যক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অন্তর্ভুক্তির জন্য সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল শাড়িকেও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, ঐতিহ্যবাহী পণ্য জামদানির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিসিক অনেক আগে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিসিকের তত্ত্বাবধানে ২০ একর জায়গায় জামদানি শিল্প নগরী গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জামদানির স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করেছে বিসিক।