বাংলাদেশে স্থাপিত কারখানাতেই শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্যই প্রথমবারের মতো মোটরসাইকেল উৎপাদন করেছে হোন্ডা। ড্রিম-১১০ ব্র্যান্ডের নতুন এই মোটরসাইকেল গতকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাতের ঘোষণা দেওয়া হয়। হোন্ডা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন মোটরসাইকেলটি তৈরি করা হয়েছে এ দেশের মানুষের গড় উচ্চতা, রাস্তার অবস্থা, আর্থিক সামর্থ্য ও জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা মাথায় রেখে। লাল, কালো ও নীল—এই তিন রঙে মোটরসাইকেলটি বাজারে পাওয়া যাবে।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় হোন্ডার কারখানায় গতকাল এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে মোটরসাইকেলটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ড্রিম-১১০ মডেলের মোটরসাইকেলটি প্রতি লিটার জ্বালানিতে চলবে ৭৪ কিলোমিটার। কারণ, এ দেশের মানুষ জ্বালানি সাশ্রয়ী মোটরসাইকেল বেশি পছন্দ করে।
বাংলাদেশের জন্য নকশা করা মোটরসাইকেল হোন্ডা ড্রিম, ১১০ সিসি ইঞ্জিনে প্রতি লিটার জ্বালানিতে যাবে ৭৪ কিলোমিটার, বাংলাদেশি রাইডারদের উচ্চতা অনুযায়ী আসন
পাশাপাশি এ দেশের মানুষ কম দামে ভালো মোটরসাইকেল পেতে চান। তাঁদের সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে নতুন মডেলের মোটরসাইকেলটির দাম ঠিক করা হয়েছে ৮৯ হাজার ৯০০ টাকা। অথচ ২০১৬ সালেও বাংলাদেশে এই মানের একটি মোটরসাইকেলের দাম ছিল প্রায় দেড় লাখ টাকা। হোন্ডার বাংলাদেশে নিজস্ব কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন করায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা কম দামে এটি বিক্রি করতে পারছে।
কোম্পানিটির কর্মকর্তারা জানান, মোটরসাইকেলটি তৈরির আগে জাপান, ভারত ও বাংলাদেশ হোন্ডার গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ (আরঅ্যান্ডডি) জরিপ চালিয়ে এ দেশের বাইক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নানা তথ্য সংগ্রহ করে। তারা একটি বাইকে কী ধরনের সুবিধা চান, কত দামে চান, এক লিটার জ্বালানিতে কত দূর যেতে চান, এ দেশের রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে কতটা আরামদায়ক মোটরসাইকেল চান ইত্যাদি বিষয়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের চাহিদা জেনে সে অনুযায়ী নতুন বাইকটি তৈরি করা হয়েছে। নতুন মোটরসাইকেলটি তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাস্তার কথাটি বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এ কারণে এই মোটরসাইকেল দেশের সব ধরনের পথে চলাচলের উপযোগী।
নতুন মোটরসাইকেলটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিমিহিকো কাতসুকি বলেন, হোন্ডা সাশ্রয়ী মূল্যে সবচেয়ে ভালো মানের পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে সমাজের প্রতি অবদান রাখবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে আনন্দ ও যাতায়াতের স্বাধীনতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান নরেশ কুমার রতন, প্রধান উৎপাদন কর্মকর্তা শইচি সাতোহ ও অর্থায়ন বিভাগের প্রধান শাহ মোহাম্মদ আশিকুর রহমান।
২০১৩ সালে ঢাকার গাজীপুরে ভাড়া কারখানায় হোন্ডা সিকেডি মোটরসাইকেল সংযোজন শুরু করে। ২০১৮ সালে গজারিয়ায় নিজস্ব কারখানা স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি।