শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য সারা দেশে খালি থাকা ৫০০টি প্লট বরাদ্দ দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহী উদ্যোক্তারা প্লটের মূল্যের ২০ শতাংশ পরিশোধ করে তা বরাদ্দ নিতে পারবেন। বাকি টাকা এককালীন বা পাঁচ বছরে ১০টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে তাদের। এ জন্য আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে নিজ নিজ জেলার বিসিক শিল্পনগরী কার্যালয়ে আবেদন করতে হবে উদ্যোক্তাদের। পরে সংশ্লিষ্ট জেলার প্লট বরাদ্দ কমিটির মাধ্যমে তা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে বরাদ্দ পাওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে সেখানে কারখানা স্থাপনের শর্ত দিয়েছে বিসিক।
বিসিক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ১৭টি জেলার বিভিন্ন শিল্পনগরীতে এসব প্লট রয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক খালি প্লট রয়েছে গোপালগঞ্জ (১৩১) ও মৌলভীবাজারে (১১৯)। এরপর চুয়াডাঙ্গায় ৫০টি, ঝালকাঠিতে ৪৩টি, বরগুনায় ৪০টি, মাদারীপুরে ৩৮টি ও খাগড়াছড়ির বিসিক শিল্পনগরীতে আছে ৩৮টি খালি প্লট। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ ও লালমনিরহাটে ৯টি করে, মেহেরপুরে ৬টি, শরীয়তপুর ও রাঙামাটিতে ৫টি করে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪টি, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে ৩টি, পাবনা ও পঞ্চগড়ে ২টি করে এবং কক্সবাজারে ১টি প্লট খালি আছে।
সংস্থাটির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে জুন পর্যন্ত সারা দেশে বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরীতে ১০ হাজার ৮৯৭টি প্লট আছে। এর মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১০ হাজার ৪৪০টি প্লটের।
গত বছরের আগস্টে ৯১৩টি খালি প্লটের কথা উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিসিক। সেখান থেকে প্রায় অর্ধেক প্লট ইতিমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়ার জন্য এখন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি আমরা।মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ), বিসিক
বিসিকের কর্মকর্তারা জানান, খালি থাকা বেশির ভাগ প্লটই ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রস্তুত করা। এ ছাড়া নতুন কিছু প্লটও গত এক–দেড় বছরে কারখানা স্থাপনের উপযোগী করা হয়েছে। তবে করোনার কারণে এত দিন অনেকেই প্লট বরাদ্দ নিতে চাননি। তাই নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে বিসিকের পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের আগস্টে ৯১৩টি খালি প্লটের কথা উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিসিক। সেখান থেকে প্রায় অর্ধেক প্লট ইতিমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়ার জন্য এখন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি আমরা।’
বরাদ্দের জন্য প্রস্তুতকৃত প্লটে শিল্প পরিচালনার জন্য সব ধরনের অবকাঠামো–সুবিধা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিকের স্থানীয় কর্মকর্তারা। বিসিকের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপব্যবস্থাপক মো. বিল্লাল হোসেন জানান, তাদের শ্রীমঙ্গল শিল্পনগরীর প্লটগুলো গত এক–দেড় বছরের মধ্যে বানানো হয়েছে। এখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নালা-নর্দমা, রাস্তাঘাটসহ সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই কাঁচামাল আনা–নেওয়া ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে কোনো অসুবিধা হবে না উদ্যোক্তাদের। প্লট বরাদ্দ নিতে ইতিমধ্যে কিছু আবেদন জমা আছে বলে জানান তিনি।
বিসিকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, সারা দেশের ১০ হাজার ৪৪০টি প্লটে প্রায় ৫ হাজার ৯৮১টি শিল্পকারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এসব কারখানায় বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। প্রায় ৬ লাখ ৮৬ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে কারখানাগুলোয়।