হেলমেট কেনার আগে জেনে নিন

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মোটরসাইকেলের হেলমেট ব্যবহার নিয়ে জাতিসংঘ বছর কয়েক আগের একটি গবেষণা প্রতিবেদন বের করে। সেখানে বলা হয়, যাত্রীবাহী গাড়ির চালকদের তুলনায় মোটরসাইকেল আরোহীদের সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার প্রবণতা ২৬ গুণ বেশি। এ অবস্থায় মাথায় হেলমেট থাকলে মোটরসাইকেল আরোহীদের প্রাণে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৪২ শতাংশ বেশি হতে পারে। আর আঘাত এড়ানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায় ৬৯ শতাংশ। সুতরাং নিজের সুরক্ষার জন্যই মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে সব সময় হেলমেট পরা প্রয়োজন। কিন্তু কোন হেলমেটটি আপনি কিনবেন?

দেশে প্রায় ২০টি ব্র্যান্ডের অর্ধশতাধিক মডেলের হেলমেট পাওয়া যায়। দেশে এখনো বড় পরিসরে হেলমেট তৈরির শিল্প গড়ে ওঠেনি। তাই প্রায় ৮০ ভাগই আমদানি করা। ঢাকায় মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ কেনার আদর্শ স্থান হচ্ছে বংশাল, মিরপুর-১০ ও বাংলামোটর। বাজারে প্রচলিত হেলমেটগুলোর মধ্যে এইচজেসি, এক্সিস, সিএসবি, এক্সোর, এমটি, এলএসটু, শার্ক, ইয়োহি, এইরোহ, স্কোরপিয়ন, ভেগা, এসএমকে, স্টিলবার্ড, স্টুডস, অ্যারোস্টার ইত্যাদি জনপ্রিয়। আকারের দিক থেকে বাজারে সম্পূর্ণ মুখের, খোলা মুখ, ফ্লিপ-আপ, ফ্লিপ-অফ, মোটো-ক্রস, ক্যাপ ইত্যাদি হেলমেট কিনতে পাওয়া যায়।

হেলমেট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভলকান লাইফস্টাইলের ব্যবস্থাপক মো. মর্তুজা বশির বলেন, হেলমেট কেনার সময় প্রথমেই দেখতে হবে নিরাপত্তার বিষয়টি। এরপর হেলমেটটি আরামদায়ক ও মানানসই কি না, তা যাচাই করতে হবে। তিনি জানান, একটি হেলমেট কতটুকু নিরাপদ, তা যাচাই করার বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বা সার্টিফিকেশন আছে। আন্তর্জাতিক সনদ থাকলেও আমাদের দেশের বাজারে হেলমেট বিক্রির আগে স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন বা বিএসটিআই থেকেও সনদ নিতে হয়। গ্রাহককে যেকোনো একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সনদ দেখে হেলমেট কেনা উচিত।

হেলমেটটি আরামদায়ক কি না, সেটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মুখের আকারের সঙ্গে মানানসই ও আরামদায়ক না হলে মোটরসাইকেল চালানোর সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হেলমেটের তিনটি প্রধান অংশ থাকে—শেল বা বহিরাবরণ, প্যাডিং বা ভেতরের নরম অংশ এবং মুখের সামনের ঢাকনা। এর মধ্যে ভালো মানের বহিরাবরণগুলো পলিকার্বনেট, গ্লাস ও কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি হয়। তবে এগুলোর দাম বেশি। আর বাজারের নিম্নমানের হেলমেটগুলো সাধারণ প্লাস্টিকের উপাদান দিয়ে তৈরি হয়, তবে তা অনিরাপদ ও দামে কম।

হেলমেটের দরদাম সম্পর্কে এবার জেনে নেওয়া যাক। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সনদ পাওয়া ভালো মানের হেলমেটগুলো আড়াই হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর প্রিমিয়াম মানের হেলমেটগুলোর দাম সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দামের মধ্যে যেসব হেলমেট আছে, তাদের অধিকাংশের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সনদ নেই। আর এক হাজার টাকার কম দামে যেসব হেলমেট বাজারে পাওয়া যায়, সেসব হেলমেট একদমই নিরাপদ নয়।