একনেকের সিদ্ধান্ত

সিনেমা হল বাঁচাতে ঋণ

  • তথ্য মন্ত্রণালয়কে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

  • করোনার কারণে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকারের সহযোগিতা চান হল মালিকেরা।

প্রতীকী ছবি

বাংলা সিনেমার দুর্দিন কাটাতে চায় সরকার। সিনেমার দুর্দশার কারণে দেশের বহু হল বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো হল বন্ধ হচ্ছে। বন্ধ সিনেমা হলগুলাকে কার্যক্রমে ফেরাতে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। হলের মালিকদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা হচ্ছে। তাঁরা হলগুলোর সংস্কারে এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন।

এ জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে একটি বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। ঢাকার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে সভাটি হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এতে অংশ নেন।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, দেশের বহু সিনেমা হল পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মালিকেরা হলগুলোর পুনর্বাসনে ঋণ চান। সে জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে সিনেমা হলগুলোকে পুনরায় বাঁচিয়ে তুলতে বিশেষ তহবিল গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল একনেকে ৪৪ কোটি টাকার ‘গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিনেমা হল বাঁচানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।

এদিকে সিনেপ্লেক্সের মালিকেরা জানিয়েছেন, করোনার কারণে তাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে জনপ্রিয় স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান এ কথা জানিয়েছেন। তিনি এই বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চান।

একনেকে ৭৯৯ কোটি টাকার শেখ কামাল ১১টি আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্পও পাস হয়। প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী ফ্রি ল্যান্সারদের সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলেছেন। তাঁদের নিবন্ধন দেওয়া যায় কি না, তা বিবেচনার সুপারিশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বিয়ে-শাদির সময় জিজ্ঞাসা করা হয়, পাত্র কী করেন। উত্তরে ফ্রি ল্যান্সার বললেও অনেকেই তা বোঝেন না। অথচ তাঁরা অনেক সরকারি কর্মকর্তার চেয়ে বেশি রোজগার করেন।’

একনেকে ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন করতে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকার প্রকল্প পাস করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১ লাখ ১৫ হাজার নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা আধুনিক করা হবে।

এ ছাড়া গতকালের সভায় ২ হাজার ৫৭০ কোটি টাকার পাঁচটি প্রকল্প পাস হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি নতুন ও দুটি পুরোনো প্রকল্প। পুরোনো প্রকল্পগুলোর খরচ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। অনুমোদিত অন্য দুটি প্রকল্প হলো ৪৭১ কোটি টাকার কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভ্রূণ স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন (তৃতীয় সংশোধিত) এবং ৬৩ কোটি টাকার মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্প।

প্রকল্পের অতিরিক্ত খরচ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রকল্প পাসের আগে গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ ও পরামর্শক খাতে খরচগুলো আমরা দুরবিন দিয়ে খুঁজে মূল্যায়ন করি। এ নিয়ে আমরা দারোগাগিরি করব, তা নয়। কোথাও অসংগতি পেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবকে জানানো হবে। প্রকল্প পাস করা মানেই শেষ নয়, পরেও পর্যালোচনা করা যাবে।’