বাসা কিংবা অফিসে অনেকেই এখন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছাড়া থাকতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। কিন্তু প্রয়োজন অনুসারে সঠিক শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) কিনতে না পারলে জীবনকে স্বস্তি দেওয়া এই যন্ত্রটি হয়ে উঠতে পারে অস্বস্তির কারণ। যেমন আপনি যদি ধারণক্ষমতার চেয়ে কম মানের এসি কেনেন, তাহলে কক্ষ শীতল করার জন্য এটি দীর্ঘ সময় ধরে চালাতে হবে। ফলে অনেক বেশি বিদ্যুৎ খরচ হবে। আবার ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানের এসি কিনলেও বিদ্যুৎ খরচ বেশি হবে। এতেও কেবল ব্যয় বাড়বে।
বাজারে থাকা অনেক বিকল্পের মধ্য থেকে আপনার বাড়ি কিংবা অফিসের জন্য কোন এসি নির্বাচন করবেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের জন্য এসি কেনার আগে ধরন, কর্মক্ষমতা, বিক্রয়োত্তর পরিষেবা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা দরকার।
এ সম্পর্কে এস্কোয়্যার ইলেকট্রনিকসের কাস্টমার রিলেশন কর্মকর্তা সুকুমার পাল প্রথম আলোকে জানান, বাসা ও অফিসে ব্যবহারের জন্য বাজারে সাধারণত উইন্ডো এসি, স্প্লিট এসি ও পোর্টেবল ধরনের এসি পাওয়া যায়। এর মধ্যে উইন্ডো এসি কক্ষের জানালার স্থানে বসানো হয়। এতে এসির কম্প্রেসর, কনডেনসারসহ অন্যান্য উপকরণ একসঙ্গে থাকে। অন্যদিকে স্প্লিট এসির মূল অংশ থাকে কক্ষের ভেতরে আর কম্প্রেসর থাকে বাইরে। স্প্লিট এসির তুলনায় কম খরচে উইন্ডো এসি পাওয়া যায়, ইনস্টল করার প্রক্রিয়াও সহজ। আবার অনেকে খুবই ছোট পরিসরে ব্যবহারের জন্য পোর্টেবল এসি পছন্দ করেন।
এসি কেনার আগে আপনার কক্ষের মাপ অনুসারে কোন ধরনের এসি প্রয়োজন, তা ঠিক করে নিন। তবে একই সঙ্গে ব্যবহারকারীর সংখ্যা, ঘরের উচ্চতা, গড় তাপমাত্রা ও জানালার আকারের মতো বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে। কর্মক্ষমতা অনুসারে বাজারে এক থেকে পাঁচ টন পর্যন্ত বিভিন্ন মানের এসি আছে। সাধারণত একটি ১২০ বর্গফুটের কক্ষের জন্য ১ টনের এসি দরকার হয়।
এসি থেকে প্রবাহিত ঠান্ডা বাতাসের মানও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটি নিশ্চিতে ভালো ফিল্টারযুক্ত এসি থাকা আবশ্যক। ভালো ফিল্টারের এসি বাতাস থেকে ময়লা, জীবাণু, ধোঁয়া কিংবা গন্ধও দূর করতে সাহায্য করে। তাই এসি কেনার সময় ইনডোর এয়ার কোয়ালিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
বাটারফ্লাই ইলেকট্রনিকসের সেবা বিভাগের প্রধান সাদাত শাহরিয়ার জানান, নন-ইনভার্টার এসিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কম্প্রেসর কয়েকবার চালু ও বন্ধ করতে হয়। এতে দীর্ঘ মেয়াদে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়। অন্যদিকে গতিনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইনভার্টার এসির কম্প্রেসর সব সময় চালু থাকে। ফলে দীর্ঘ সময় শীতলতা বজায় রাখার পাশাপাশি ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়।
যন্ত্রটি নির্দিষ্ট স্থানে বসানো ও পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণের ওপরও নির্ভর করে এসির কার্যক্ষমতা। সঠিকভাবে স্থাপন করা না হলে যন্ত্রের উপাদানগুলোর ক্ষতি হতে পারে।