অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দেশে দিন দিন মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে। এ খাত নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিকুল ইসলাম
প্রথম আলো: দেশে মোটরসাইকেলের বাজার কত বড়?
হাফিজুর রহমান খান: দেশে মোটরসাইকেলের বাজার প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার। এই বাজার একচেটিয়াভাবে দেশীয় কোম্পানিগুলোর দখলে, যারা এখানে যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও সংযোজন করে। মাত্র ৫ শতাংশের মতো মোটরসাইকেল আমদানি হয়ে থাকে। এই খাতে গত এক দশকে বার্ষিক গড়ে ১৫ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
প্রথম আলো: রানারের উৎপাদিত মোটরসাইকেলের বাজার কেমন?
হাফিজুর রহমান খান: বর্তমানে দেশে ১০টির বেশি কোম্পানি মোটরসাইকেল উৎপাদন করে। এর মধ্যে আমাদের কোম্পানি রানারসহ কেটিএম, ভেসপা ও এপ্রিলিয়া—এই চার ব্র্যান্ড ১৫টির বেশি মডেলের মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। ১০০ সিসির নিচে যেসব মোটরসাইকেল আছে, সেটি আমরা বেশি বিক্রি করি। পাশাপাশি স্কুটার ধরনের মোটরসাইকেল বিক্রিতেও আমরা এখন বাজারের শীর্ষস্থানে আছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, কয়েক বছর ধরে দেশে উচ্চ সিসির মোটরসাইকেল বিক্রি বাড়ছে। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত কম সিসির মোটরসাইকেলের বাজার কমছে। তবে আমরা স্কুটার ও ১০০ সিসির কম ক্ষমতার মোটরসাইকেলের বাজার সম্প্রসারণে নজর দিচ্ছি।
প্রথম আলো: মোটরসাইকেল উৎপাদনে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছি কি না।
হাফিজুর রহমান খান: আমরা বিশেষ করে মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ তৈরিতে অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের দেশে মোটরসাইকেলের মূল কাঠামো বা চেসিস ও আর একটি যন্ত্রাংশ বানালেই একটি কোম্পানিকে উৎপাদনকারী হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এখনো ৭০ শতাংশের বেশি যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়। এ আমদানিনির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাই আমরা এখন যন্ত্রাংশ উৎপাদনের দিকে বেশি নজর দিচ্ছি।
প্রথম আলো: বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল উৎপাদন নিয়ে আপনাদের ভাবনা কী?
হাফিজুর রহমান খান: বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের গবেষণা ও পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে। এ নিয়ে এখনো সরকারের নীতিমালা তৈরি হয়নি। তাই আমরাও বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি শুরু করতে পারছি না। তবে আমাদের প্রস্তুতি আছে। নীতিমালা হয়ে গেলে দ্রুতই পণ্যটি বাজারে নিয়ে আসতে পারব।
প্রথম আলো: কোন কোন দেশে রানারের মোটরসাইকেল রপ্তানি হচ্ছে?
হাফিজুর রহমান খান: ইতিমধ্যে নেপাল ও ভুটানে মোটরসাইকেল রপ্তানি করেছি। এ ছাড়া আফ্রিকার তিনটি দেশ ও শ্রীলঙ্কায় রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কয়েকটি দেশে রপ্তানি প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে আটকে আছে। আশা করছি, দ্রুত তা কেটে যাবে।