অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দেশে দিন দিন মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে। এ খাত নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের প্রথম অ্যাপভিত্তিক জ্বালানি পরিষেবা প্রতিষ্ঠান মাই ফুয়েল পাম্পের প্রধান নির্বাহী পার্থ প্রতীম চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফয়জুল্লাহ।
প্রথম আলো: একেবারে নতুন ধরনের এ ব্যবসার ধারণা মাথায় এল কীভাবে?
পার্থ প্রতীম চৌধুরী: ২০২০ সালে আমাদের একটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ছিল। করোনার কারণে ওই ব্যবসা যখন বন্ধ হয়ে গেল, তখন আমরা বেকার হয়ে গেলাম। সেই সময় কিছু একটা করতে হবে, সেই ভাবনা থেকেই নতুন এই উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করি। তবে মূল আইডিয়াটা এসেছিল মহাসড়কে তেলের পাম্পের সংকট ও মাঝপথে গাড়ির তেল ফুরালে বিভিন্নজনের ভোগান্তি দেখে।
প্রথম আলো: মাই ফুয়েল পাম্পে কি সব ধরনের জ্বালানি তেল পাওয়া যায়?
পার্থ প্রতীম চৌধুরী: বর্তমানে আমরা তেলের মধ্যে শুধু ডিজেল সরবরাহ করছি। যেহেতু এখন সক্ষমতা কম, অন্যদিকে বাজারে ডিজেলের চাহিদা বেশি, এ জন্য এটা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। বাসাবাড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডারও পৌঁছে দিচ্ছি। সক্ষমতা বাড়লে পেট্রল, অকটেনসহ সব ধরনের জ্বালানি নিয়ে কাজ করব। বর্তমানে আমাদের প্রতি মাসে ১০ লাখ লিটার তেল সরবরাহের সক্ষমতা আছে।
প্রথম আলো: কোন কোন এলাকা আপনাদের সেবার আওতায় এসেছে। সেবা দিতে কত সময় নেন আপনারা?
পার্থ প্রতীম চৌধুরী: আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি প্রায় দেড় বছর হতে চলল। এর মধ্যে বর্তমানে ছয়টি ফুয়েল ট্যাংকার গাড়ির মাধ্যমে ঢাকা মহানগরসহ গাজীপুর, সাভার ও নরসিংদী পর্যন্ত সেবা দিচ্ছে মাই ফুয়েল পাম্প। এসব এলাকায় অর্ডার পাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে আমরা ডিজেল পৌঁছে দিই। আর গ্যাসের সিলিন্ডার পৌঁছে দিতে সময় নিই মাত্র এক ঘণ্টা। আমাদের পরিকল্পনা আছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে মাই ফুয়েল পাম্পকে সব কটি বিভাগীয় শহর ও পাঁচ বছরের মধ্যে সব জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার।
প্রথম আলো: কেন একজন ক্রেতা মাই ফুয়েল পাম্প থেকে জ্বালানি কিনবে?
পার্থ প্রতীম চৌধুরী: প্রথমত, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে জ্বালানি নিলে তার গুণগত মান এবং ওজন নিয়ে কোনো সংশয় থাকে না। দ্বিতীয়ত, আমরা বাজারমূল্যেই জ্বালানি বিক্রি করি। তাই মূল্য নিয়ে ভোক্তার প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। উপরন্তু ক্রেতারা সুবিধামতো স্থানে জ্বালানি পেয়ে যান। মনে করেন, বাসাবাড়ির জেনারেটরের জন্য আপনার তেলের প্রয়োজন। তার জন্য প্রায়ই আপনাকে পাম্পে দৌড়াতে হয়। অথচ আমাদের বললে আমরা তেল নিয়েই আপনার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসব। আমাদের লক্ষ্য, ক্রেতার দোরগোড়ায় মানসম্মত ও বাজারমূল্যে জ্বালানি পৌঁছে দেওয়া।
প্রথম আলো: আপনাদের এ ব্যবসায় বিনিয়োগ কেমন? ক্রেতাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
পার্থ প্রতীম চৌধুরী: আমরা সম্প্রতি ৪ লাখ ডলারের একটা বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছি। এটি একটি অ্যাঞ্জেল বিনিয়োগ, যেটা সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে। শুরুতে আমাদের যে বিনিয়োগ ছিল, তার সঙ্গে সরকারের আইডিয়া প্রকল্প থেকে ১০ লাখ টাকার একটা তহবিলও পেয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত আমরা ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর ব্যবসা শুরুর কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ‘মুজিব ১০০ আইডিয়া’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। ২০২২ সালে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের বেস্ট স্টার্টআপ পুরস্কার পেয়েছি। এত কম সময়ে এসব পুরস্কার পাওয়ায় আমরা বেশ উৎসাহ পেয়েছি।