ভারতের বীরভূম থেকে আরও ৫০ হাজার টন নন–বাসমতী অর্থাৎ সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। আজ বুধবার অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এ নিয়ে চলতি মাসে ৫০ হাজার করে মোট দেড় লাখ টন চাল আমদানির তিনটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয় ক্রয় কমিটিতে। গড়ে দাম পড়ছে প্রতি কেজি ৩৪ টাকা। ২ ডিসেম্বর ৫০ হাজার টন নন–বাসমতী চাল ভারতের বীরভূম থেকে এবং ৯ ডিসেম্বর ভারতের মুম্বাই থেকে আরও ৫০ হাজার টন একই ধরনের চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয় ক্রয় কমিটি। তবে গতকালের প্রস্তাবটি নিয়মিত আলোচ্যসূচিতে ছিল না। এটি টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
এক মাসে ৫০ হাজার করে মোট তিনটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে ৫০ হাজার টন মুম্বাই থেকে আর ১ লাখ টন বীরভূম থেকে আমদানি করা হচ্ছে। প্রতি কেজি চালের দাম পড়ছে গড়ে ৩৪ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল গতকাল সাংবাদিকদের জানান, ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চালের মূল্য ধরা হয়েছে ১৬৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের দফার মতো এবারও কাজ পেয়েছে বীরভূমের প্রতিষ্ঠান এমএসপিকে এগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতি টন চালের দাম ৩৯৭ দশমিক ৭১ মার্কিন ডলার। আর প্রতি কেজি চালের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ভ্যাট ছাড়া ৩৩ দশমিক ৭২ টাকা।
জানা গেছে, ২ ডিসেম্বরের অনুমোদিত প্রস্তাবে প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হয়েছিল ৩৪ টাকা ২৮ পয়সা, আর ৯ ডিসেম্বরের অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি কেজির দাম ছিল ৩৫ টাকা ২৭ পয়সা। মুম্বাইয়ের চাল সরবরাহের কাজ পেয়েছিল এম এস রিকা গ্লোবাল ইমপ্যাক্টস লিমিটেড।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সরকারি চালের মজুত দ্রুত কমছে। গত মঙ্গলবার সরকারি গুদামে ৫ লাখ ৩৬ হাজার টন চাল ছিল। অথচ গত বছরের একই সময়ে তা ছিল ১০ লাখ ৬৬ হাজার টন।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত মঙ্গলবার ঢাকায় মোটা চাল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা, মাঝারি চাল ৫৩ থেকে ৬০ টাকা ও সরু চাল ৬০ থেকে ৬৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। টিসিবির তথ্য অনুযায়ীই গত তিন দিনে মাঝারি ও সরু চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।
চালের বাড়তি দামের কারণে মজুত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ই ১০ লাখ টন চাল আমদানি করবে। বেসরকারি খাতকে সুযোগ দেওয়া হবে আরও ১০ লাখ টন চাল আমদানির জন্য। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে গত রোববার বেসরকারি খাতে চাল আমদানিতে করভার ৬২ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গতকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত আগস্ট থেকে উল্লেখ রয়েছে, নভেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মিটিয়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে।