তৈরি পোশাক রপ্তানি

বৈশ্বিক পোশাকের বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা বাড়বে

পণ্য রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাত তৈরি পোশাক। প্রথম আলো ফাইল ছবি
পণ্য রপ্তানি আয়ের শীর্ষ খাত তৈরি পোশাক। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আগামী সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বৈশ্বিক তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের হিস্যা (মার্কেট শেয়ার) ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।

ফারুক হাসান বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) হিসাবে বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানিতে ২০২০ সালে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। সে বছর করোনার কারণে প্রায় দেড় মাস পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। গত বছরের হিসাবটি ডব্লিউটিও এখনো প্রকাশ করেনি। আমাদের প্রত্যাশা, ২০২১ সালে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ভাবমূর্তি উন্নত করার লক্ষ্যে আগামী নভেম্বরে ঢাকায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ নামে সপ্তাহব্যাপী আয়োজন করতে যাচ্ছে বিজিএমইএ। এ সময় প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ৩৭ আইএএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন। উভয় অনুষ্ঠানের লোগো উন্মোচন উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সভাপতি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা বৃদ্ধির প্রত্যাশার কথা জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছর শেষে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশনের মহাসচিব ম্যাথিয়াস ক্রিয়েটি, বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদউল্লাহ আজিম, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজ উদ্দিন প্রমুখ।

সম্ভাবনার পাশাপাশি তৈরি পোশাকশিল্পের বর্তমান চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা বলেন ফারুক হাসান। তিনি বলেন, ‘কাঁচামালের সংকট, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, কনটেইনার ও জাহাজভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে উদ্যোক্তারা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে একদিকে যেমন জ্বালানি তেলসহ খাদ্যের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে ইউরোপসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাও বাড়ছে। আবার বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি ভয়াবহভাবে বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাকের চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। বিষয়টি আমাদের উদ্যোক্তাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। এ পরিস্থিতিতে পোশাক রপ্তানিতে বর্তমানে যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, সেটির দিকে না তাকিয়ে কীভাবে আমরা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও বাড়াতে পারি, সেটিই আমাদের কৌশল হওয়া উচিত।’

বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের কাছে নীতিসহায়তা অপরিবর্তিত রাখতে আহ্বান জানান বিজিএমইএর সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে আমাদের প্রথম ও প্রধান প্রত্যাশা হলো নীতি স্থিতিশীলতা।’

কর ও রাজস্বসংক্রান্ত নীতিগুলো অন্তত পাঁচ বছরের জন্য অপরিবর্তিত রাখা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১২-১৮ নভেম্বর ঢাকার পূর্বাচলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিতব্য মেড ইন বাংলাদেশ উইকে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি আয়োজন থাকবে।