রংপুরে টিউবওয়েল তৈরির মাধ্যমে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। এখন তাদের তৈরি পণ্য ১৪১টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪,৪৪১ কোটি টাকা। প্রাণ-আরএফএল জানিয়েছে, দেশের এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে তাদের পণ্য যায় না। ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সুপারশপে এখন প্রাণের পণ্য বিক্রি হয়। মধ্যপ্রাচ্য, ভারতের রাজ্যে রাজ্যে, নেপাল, ভুটান, আফ্রিকায় প্রাণের সরব উপস্থিতি।
করোনাকালের প্রথম দুই মাস (এপ্রিল-মে) সবাই যখন ঘরবন্দী ছিল, তখন প্রাণ-আরএফএলের চেয়ারম্যান ঘুরে বেড়িয়েছেন জেলায় জেলায়। কখনো কারখানায় গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছেন। কখনো বিক্রয় কর্মীর সঙ্গে ঘুরেছেন দোকানে দোকানে। অফিস করেছেন নিয়মিত।
কেন, তা নিজেই ব্যাখ্যা করলেন। বললেন, ‘করোনায় এক দিনের জন্য আমরা কারখানা বন্ধ করিনি (যেগুলোতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল না)। অফিস খোলা ছিল, বিপণন কর্মীরা মাঠে ছিলেন। আমি নিজে ঘরে বসে থেকে তো কর্মীদের বাইরে বের হতে বলতে পারি না।’
করোনাকালে প্রাণ-আরএফএল সচল ছিল বলেই প্রায় এক লাখ চুক্তিভিত্তিক কৃষকের কাছ থেকে বাদাম, মরিচ, আম, দুধসহ কৃষিপণ্য কিনতে পেরেছে। নিজেদের এক লাখের বেশি কর্মীর পরিবারও জীবিকার সংকটে পড়েনি। বিপাকে পড়েনি প্রাণ-আরএফএলও। দুই মাস (এপ্রিল-মে) তাদের বিক্রি কিছুটা কম ছিল। জুন থেকে ব্যবসা আবার গতি পেয়েছে।
করোনা সংকটে মাঠে নেমে প্রাণের নেতৃত্ব দিয়েছেন আহসান খান চৌধুরী, যিনি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রাণপুরুষ প্রয়াত আমজাদ খান চৌধুরীর ছেলে। ১৯৮১ সালে আমজাদ খান চৌধুরীর হাতে প্রাণ-আরএফএলের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু আজকে দেশের কোনায় কোনায়, বিশ্বজুড়ে প্রাণ-আরএফএলের পণ্য ছড়িয়ে দেওয়ার মূল কারিগর আহসান খান চৌধুরী।
ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সুপারশপে এখন প্রাণের পণ্য বিক্রি হয়। মধ্যপ্রাচ্য, ভারতের রাজ্যে রাজ্যে, নেপাল, ভুটানে প্রাণের সরব উপস্থিতি। এমনকি যে আফ্রিকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কেউ যেতে চান না, সেখানেও প্রাণ-আরএফএলের ভালো অবস্থান রয়েছে। প্রাণের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের ৬ শতাংশ আসে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে।
প্রাণ-আরএফএল জানিয়েছে, দেশের এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে তাদের পণ্য যায় না। ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সুপারশপে এখন প্রাণের পণ্য বিক্রি হয়। মধ্যপ্রাচ্য, ভারতের রাজ্যে রাজ্যে, নেপাল, ভুটানে প্রাণের সরব উপস্থিতি। এমনকি যে আফ্রিকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কেউ যেতে চান না, সেখানেও প্রাণ-আরএফএলের ভালো অবস্থান রয়েছে। প্রাণের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের ৬ শতাংশ আসে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে।
ঢাকার প্রগতি সরণিতে প্রাণ-আরএফএলের কার্যালয়ে গত বুধবার প্রাণের প্রতিষ্ঠা, বড় হওয়া, কোম্পানির মূলনীতি, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা বলেন আহসান খান চৌধুরী। এতে উঠে আসে কীভাবে পদে পদে তাঁদের লড়াই করতে হয়েছে, কীভাবে ঋণের জন্য দিনের পর দিন ব্যাংকে গিয়ে বসে থাকতে হয়েছে, কীভাবে অপরিচিত একটি দেশে গিয়ে পণ্য কিনতে ব্যবসায়ীদের রাজি করাতে হয়েছে।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘বাবাকে দেখেছি সামান্য কিছু টাকা ঋণের জন্য ব্যাংকের পরিচালকের বাসায় গিয়ে কতটা মিনতি করেছেন।’ বললেন নিজের অভিজ্ঞতাও। বলেন, ‘নতুন একটি কারখানার জন্য ঋণ পেতে আমি অন্তত ১২০ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যাংকে বসে থেকেছি। কত কষ্ট তখন পেতে হয়েছে।’
অবশ্য এখন আর প্রাণ-আরএফএলকে ঋণের জন্য ব্যাংকে গিয়ে কাকুতি-মিনতি করতে হয় না। ব্যাংকই স্ব–উদ্যোগে তাদের ঋণ দেয়। প্রাণ ঋণ পায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও। এক দিনের জন্যও খেলাপি না হওয়া প্রাণকে ঋণ দিতে পারলেই যে ব্যাংকের লাভ।
সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পদে থাকার সময় আমজাদ খান চৌধুরী অবসর নেন। ১৯৮১ সালে, ৪২ বছর বয়সে। ওই বছরই শুরু করেন ফাউন্ড্রি বা টিউবওয়েল তৈরি ও আবাসন ব্যবসা। সম্বল পেনশনের টাকা।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘বাবা আবাসন ব্যবসাটি বেশি দিন করেননি। কারণ এতে টাকা আটকে থাকে। কোম্পানিতে নগদ টাকার প্রবাহের পূর্বাভাস বোঝা যায় না।’
১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে কৌটায় আনারস রপ্তানি করে প্রাণের রপ্তানি শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ১৪১টি দেশে প্রাণ-আরএফএলের পণ্য রপ্তানি হয়।আহসান খান চৌধুরী, চেয়ারম্যান ও সিইও, প্রাণ–আরএফএল গ্রুপ
ফাউন্ড্রির ব্যবসায় নজর বেশি দিলেন আমজাদ খান চৌধুরী। রংপুরে ফাউন্ড্রি প্রতিষ্ঠা করেন, নাম দেন রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড (আরএফএল)। যার আওতায় এখন বহু ধরনের পণ্য রয়েছে। অবশ্য আমজাদ খান চৌধুরীর লক্ষ্য ছিল কৃষির ব্যবসায় নামা। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলো অ্যাগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিডেট, প্রাণ। প্রতিষ্ঠানটি নরসিংদীতে জমি ইজারা নিয়ে শুরুতে প্রাণ রজনীগন্ধা ফুল, পেঁপে, কলা ও আনারস উৎপাদন করত। ঢাকায় এনে কারওয়ান বাজারে বিক্রি করত। দেখা গেল, মৌসুমের সময় দাম পাওয়া যায় না। আমজাদ খান চৌধুরী আনারস প্রক্রিয়াকরণের কারখানা করার চিন্তা করলেন।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, তখনকার বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের (বিএসবি) ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা একটি রুগ্ণ কারখানা ছিল। সেটি কিনে নিল প্রাণ। ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে কৌটায় আনারস রপ্তানি করে প্রাণের রপ্তানি শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ১৪১টি দেশে প্রাণ-আরএফএলের পণ্য রপ্তানি হয়।
বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যবসার আকার জানাতে একটা অনীহা আছে। সাক্ষাৎকারের শেষ দিকে আমরা জানতে চাইলাম, প্রাণ-আরএফএলের ব্যবসার আকার কত। আহসান খান চৌধুরী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে হিসাব বিভাগ থেকে ব্যবসার সঠিক আকারটি জেনে আমাদের জানাতে বললেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাণ-আরএফএলের বিক্রির পরিমাণ ১৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা।
প্রাণ-আরএফএল কী কী পণ্য তৈরি করে—প্রশ্ন আসলে এটা নয়। বাজারে একটি প্রচলিত কথা আছে যে তারা কী তৈরি করে না। মোটাদাগে ১০টি শ্রেণিতে প্রাণ ৮০০টির বেশি পণ্য তৈরি করে। আর আরএফএল ১৫টি শ্রেণিতে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার পণ্য তৈরি করে। খাদ্য ও পানীয়, পোশাক, প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিকস, আসবাব, সাইকেল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদি বহু ধরনের খাতে তাদের ব্যবসা রয়েছে। দেশের ১৩টি স্থানে ২৩টি কারখানা রয়েছে প্রাণ-আরএফএলের। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার নিজস্ব ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে পণ্য পরিবহন করে। এর বাইরে প্রতি মাসে গড়ে ৬০০টি ট্রাক ভাড়া করে।
ব্যবসা এত বিস্তৃত করার কারণ কী, জানতে চাইলে আহসান খান চৌধুরী বলেন, একটা হলো উৎপাদন ও বিপণন ব্যয় কমিয়ে আনা। উৎপাদন বেশি হলে খরচ কম হয়। আরেকটি কারণ হলো, বড় না হলে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন হয়।
এত বড় হওয়ার কৌশল কী? আহসান খান জবাব দিলেন, ‘আমরা দেশজুড়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি। বিপুল কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম, রোবট দিয়ে কাজ করলে মানুষের উপকার কী? কর্মীরাই কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়েছেন। বাড়তি বিক্রির ভাগও প্রণোদনা হিসেবে তাঁদের দেওয়া হয়।’
প্রাণ-আরএফএল যে এতটা বড় হলো, তার পেছনে সরকারের সহায়তাও অনেক বলে উল্লেখ করেন আহসান। তিনি জানান, প্রাণের শুরুর দিকে দুটি কারখানা হয়েছে সরকারের সমমূলধন তহবিল (ইইএফ) থেকে অর্থ নিয়ে। যখন টাকা ফেরত দেওয়া হলো, সরকারও মালিকানার অংশ ফিরিয়ে দিয়েছে। বিদেশে রপ্তানি বাজার তৈরির জন্য সরকারের তহবিলের বিষয়টিও উল্লেখ করেন আহসান। বলেন, এখনকার চ্যালেঞ্জ ভিন্ন। বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা যাতে ভিয়েতনামের চেয়ে কম না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। বন্দর-অবকাঠামো আরও উন্নত করতে হবে। ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা আনতে হবে, মূলধন বাড়াতে হবে।
বাবা বলতেন আমি ব্যবসা এতটা বিস্তৃত করে ফেলছি, যার ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু আমি সব সময় একটু সম্প্রসারণমুখী চিন্তা করিআহসান খান চৌধুরী, চেয়ারম্যান ও সিইও, প্রাণ–আরএফএল গ্রুপ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হিসাববিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯২ সালে প্রাণে যোগ দেন আহসান খান চৌধুরী। শুরুর দায়িত্ব ছিল বিক্রয় ও হিসাব বিভাগ দেখাশোনা করা। বয়স ছিল ২১ বছর ৯ মাস। আহসান খান বলেন, ‘আমি যোগ দেওয়ার পর পুরো বাংলাদেশ ঘুরেছি। মানুষের সঙ্গে মিশে নতুন নতুন ধারণা তৈরি করেছি। তার সঙ্গে বিদেশ থেকে আনা অভিজ্ঞতা যোগ করে প্রাণকে বিস্তৃত করার দিকে নজর দিলাম।’
‘বাবা বলতেন আমি ব্যবসা এতটা বিস্তৃত করে ফেলছি, যার ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু আমি সব সময় একটু সম্প্রসারণমুখী চিন্তা করি’—যোগ করেন আহসান।
বিদেশে বাজার সন্ধানে কী কী করেছেন, তারও গল্প বলেন আহসান খান। তিনি জানান, যুক্তরাজ্যে কোনোভাবেই ক্রেতা ধরতে পারছিলেন না। একসময় বন্ধুর কাছে এক কনটেইনার পণ্য পাঠালেন। তারপর সেখানে গিয়ে গাড়ি ভাড়া করে দোকানে দোকানে পণ্য বিক্রি শুরু করেন। আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে যাওয়া আরও রোমাঞ্চকর। জিবুতিতে নেমে ভিসাহীন আহসান অপেক্ষা করছিলেন কখন উড়োজাহাজ ছেড়ে যায়। উড়াল দেওয়ার পর আহসান ইমিগ্রেশন কর্মীদের বললেন, ‘আমি ফ্লাইট মিস করেছি। এখন তোমাদের দেশে দু-এক দিন থাকার ব্যবস্থা করে দাও।’
অনুমতি পেয়ে আহসান খান গেলেন জিবুতির ব্যবসায়ীদের সংগঠনে। সবার নম্বর নিয়ে একের পর এক ফোন করা শুরু করলেন। কেউ কেউ পাত্তা দিল, কেউ দিল না। সুপারশপের মালিক আলগামিলকে রাজি করালেন পণ্য নিতে। সেই আলগামিল গ্রুপ এখনো প্রাণের পণ্য কেনে। এখন আফ্রিকার দেশগুলোতে বছরে ২০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে প্রাণ।
অবশ্য প্রাণের বড় বাজার ভারত, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়া। ১৬ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পেয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
বাবা কোম্পানিতে মালিক-কর্মীর কোনো ভেদাভেদ রাখেননি। তিনি চাইতেন কর্মীদের মধ্যেও কোম্পানিকে নিজের মনে করার মানসিকতা তৈরি হোক।’আহসান খান চৌধুরী, চেয়ারম্যান ও সিইও, প্রাণ–আরএফএল গ্রুপ
সাক্ষাৎকারকালে আহসান খান চৌধুরীর পরনে ছিল আকাশি শার্ট। কার্যালয়ে সবার পরনেই একই পোশাক। কেন, প্রাণ জানায় তারা কোনো ভেদাভেদ না রাখতে সবাই একই পোশাক পরে। মূল কার্যালয়ের ক্যানটিনে সবাই একসঙ্গে বসে খেতে পারেন। কারও জন্য কোনো আলাদা টেবিল নেই।
আহসান খান চৌধুরীও ওই টেবিলে বসেই খাবার খান। ঢাকার রাস্তায় তিনি সাইকেল চালান। কর্মীর মোটরসাইকেল নিয়ে সচিবালয়ে রওনা দেন। যানজট দেখলে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে হাঁটা দেন। কোম্পানির উচ্চপর্যায়ের কাউকে দেখলে কর্মীর উঠে দাঁড়ানোর বদলে বসে কাজ করাকেই বেশি পছন্দ করেন তিনি। আহসান বলেন, ‘বাবা কোম্পানিতে মালিক-কর্মীর কোনো ভেদাভেদ রাখেননি। তিনি চাইতেন কর্মীদের মধ্যেও কোম্পানিকে নিজের মনে করার মানসিকতা তৈরি হোক।’
আমজাদ খান চৌধুরীর মৃত্যুর পর ২০১৬ সালে প্রাণ-আরএফএলের চেয়ারম্যান হন আহসান খান চৌধুরী। আমজাদ খানের চার সন্তান। বড় ছেলে আজার খান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করেন। বড় মেয়ে সেরা হক চিকিৎসক, কানাডায় থাকেন। তবে কিছুদিন পরে প্রাণের সান হেলথ কেয়ারের হাল ধরবেন বলে কথা রয়েছে। ছোট মেয়ে উজমা চৌধুরী এখন প্রাণ-আরএফএলের পরিচালক। তিনি আর্থিক দিকটি সামলান।
আমজাদ খান চৌধুরী ও আহসান খান চৌধুরীর পর এখন ব্যবসায় তৃতীয় প্রজন্ম যোগ দিচ্ছে। আহসানের বয়স এখন ৫০ বছর। তাঁর দুই মেয়ে। সামিয়া চৌধুরী ও সামিন চৌধুরী।
সামিয়া চৌধুরী কিছুদিন আগে কানাডা থেকে পড়াশোনা শেষে ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন। আলাপের একপর্যায়ে আহসান মেয়েকে ডাকলেন। সামিয়া বললেন, ‘যেদিন আমার পড়াশোনা শেষ হলো, পরের দিনই যোগ দিলাম। কাজ করছি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে।’
দেশের কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠী দ্বিতীয়-তৃতীয় প্রজন্মের হাতে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া নিয়ে সংকটে ভুগছে। কেউ কেউ নতুন ব্যবসা করতে গিয়ে পুরো কোম্পানি ডুবিয়ে দিচ্ছে। তাদের প্রতি পরামর্শ কী? আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম ১০ বছর বাবার দেখানো পথেই চলতে হবে। এরপর নিজের মেধা খাটিয়ে ঝুঁকি নেওয়ার সময়।’