বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে সিআইপি (বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) নির্বাচিত করেছে সরকার।
গত বুধবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ২০১৯ সালের জন্য তিনটি আলাদা ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত এনআরবি-সিআইপি তালিকা প্রকাশ করা হয়।
তালিকায় বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনাবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে ৪৭ জন, বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক অনাবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে ৯ জন এবং বাংলাদেশে শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে ১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন।
তিন ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত সিআইপিদের মধ্যে ৩৭ জন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। এর মধ্যে ২৬ জনই সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন। তাঁদের মধ্যে দুইজন নারী রয়েছেন। এর পরই রয়েছে ওমান। দেশটি থেকে সিআইপি হয়েছেন নয়জন। বাকিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের দুইজন করে এবং কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ ও কম্বোডিয়ার একজন করে প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। ৫৭ জন সিআইপির মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ জনের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়।
‘বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনাবাসী বাংলাদেশি’ ক্যাটাগরিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সিআইপি হয়েছেন মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান, মোহাম্মদ মাহাবুব আলম, ওমর ফারুক, মোহাম্মদ মনির হোসেন, সাইফুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, আবুল কালাম, রিপন দত্ত, আবদুল হালিম, ইব্রাহিম ওসমান আফলাতুন, মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান, মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ আইয়ুব আলী বাবুল, আবদুল গণি চৌধুরী, মোরশেদুল ইসলাম, মো. ইউনুছ মিয়া চৌধুরী, মোসাম্মৎ জেসমিন আক্তার, নিগার সুলতানা, মোহাম্মদ আবু জাফর চৌধুরী, মতিউর রহমান, মো. ফরিদ আহমেদ, মো. ইজাজ হোসেন, মোহাম্মদ এহসানুর রহমান ও খোরশেদ আলম।
একই ক্যাটাগরিতে ওমান থেকে সিআইপি হয়েছেন মোহাম্মদ ইয়াসিন চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আশরাফুর রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া, মো. তৌহিদুল আলম, মোহাম্মদ বাদশা মিয়া, মোহাম্মদ কবীর আহমেদ, পারভেজ মোহাম্মদ আমানুল্লাহ চৌধুরী, মো. নুরুল আমিন ও আবদুল করিম।
এ ছাড়া এই ক্যাটাগরিতে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (থাইল্যান্ড), ফারুকী হাসান (কানাডা), মোহাম্মদ আবদুর রহিম (যুক্তরাজ্য), কাজী সারওয়ার হাবীব (জাপান), কল্লোল আহমেদ (যুক্তরাষ্ট্র), এস এম পারভেজ তমাল (রাশিয়া), মোহাম্মদ আলমগীর জলিল (রাশিয়া), ইকরাম ফরাজী (যুক্তরাজ্য), মোহাম্মদ আজাদুর রহমান (সিঙ্গাপুর), লুৎফুর রহমান মুন্সী (ইতালি), মো. মঞ্জুরুল হোসেন (অস্ট্রেলিয়া), ইফতেখারুল আলম (যুক্তরাষ্ট্র), আবদুল আজিজ খান (কাতার), মোহাম্মদ আলম (সৌদি আরব) সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।
বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের সর্বাধিক আমদানিকারক ক্যাটাগরিতে সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আকতার হোসেন (মালয়েশিয়া), মোহাম্মদ ওয়াহিদুল ইসলাম (সংযুক্ত আরব আমিরাত), নজরুল ইসলাম (ইতালি), মোহাম্মদ সেলিম (সংযুক্ত আরব আমিরাত), শেখ মঞ্জুর মোরশেদ (জাপান), মারুফা আহমেদ (যুক্তরাষ্ট্র), রফিকুল ইসলাম (মালয়েশিয়া), কিবরিয়া নাইম (থাইল্যান্ড) এবং মোহাম্মদ সোহেল রানা (মালদ্বীপ)।
বাংলাদেশে শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে একমাত্র হিসেবে সিআইপির মর্যাদা পেয়েছেন কম্বোডিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি আবুল খায়ের মিয়া।
১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে নির্বাচিত প্রবাসী সিআইপিদের সনদ প্রদান করার কথা রয়েছে।
১. নির্বাচিত সিআইপিকে (এনআরবি) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সরকার অনুমোদিত পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
২. সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্রের মেয়াদকালীন সচিবালয়ে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
৩. সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারি বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হওয়ার যোগ্যতা, দেশে-বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পাবেন।
৪. দেশে-বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার।
৫. জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে অতিথি এবং বাংলাদেশে উপস্থিত থাকলে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশন কর্তৃক নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন।
৬. এনআরবি–সিআইপিরা উড়োজাহাজ, রেল, সড়ক ও জলযানে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন।
৭. স্ত্রী, সন্তানসহ চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
৮. বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীর অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
৯. বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ও স্পেশাল হ্যান্ডেলিংয়ের সুবিধা পাবেন।
১০. বাংলাদেশে উপস্থিত থাকলে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে ও সিটি করপোরেশন কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন।